পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বিংশ পরিচ্ছেদ
১৩৭

কার্য্যে নিযুক্ত করিতে চাহিয়াছিলেন, কিন্তু ময়ূখের সন্ধান না পাইয়া বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের মন ভাঙ্গিয়া গিয়াছিল, তিনি কর্ম্মগ্রহণ না করিয়া তীর্থ ভ্রমণের ছলে আগ্রা পরিত্যাগ করিলেন।

 তর্করত্ন যখন আসফখাঁর গৃহে প্রবেশ করিলেন, বৃদ্ধ নবাব তখনও অন্তঃপুরে যান নাই। অনেক কর্ম্মচারী ও খোজাকে পরিচয় দিয়া বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ বাদশাহের শ্বশুরের সাক্ষাৎ পাইলেন। একজন খোজা তাঁহাকে চিনিত; সে দয়াপরবশ হইয়া বিদেশীয় বৃদ্ধকে নবাবের নিকট লইয়া গেল। আসফ্‌ খাঁ যমুনাতীরে বার দুয়ারীতে বসিয়াছিলেন। সুন্দরী ইরাণী ক্রীতদাসীগণ তাঁহার সম্মুখে নৃত্য করিতেছিল, বহু সভাসদ্‌ আমীর ওমরাহ মজলিসে উপস্থিত ছিলেন। আসফ্‌ খাঁ তর্করত্নকে দূর হইতে দেখিয়াই চিনিয়াছিলেন। বৃদ্ধ তাহার সম্মুখে উপস্থিত হইবামাত্র তিনি তাঁহাকে অভ্যর্থনা করিয়া উপবেশন করিতে অনুরোধ করিলেন। তৃতীয় প্রহর রাত্রিতে বৃদ্ধের আগমনের কারণ শুনিয়াই আসফ্‌ খাঁ মজলিস্‌ ত্যাগ করিয়া উঠিলেন; নৃত্য থামিল, মজলিস্ ভাঙ্গিয়া গেল। কক্ষান্তরে আসিয়া নবাব বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হইয়াছে?”

 বৃদ্ধ ময়ূখের দিল্লী আগমন, বিনোদিনীর বাদ্‌শাহ বেগমের সহিত পরিচয় এবং ময়ূখের দেওয়ান-ই-খাসে আগমন প্রভৃতি সমস্ত ঘটনা বিবৃত করিয়া কহিলেন, “নবাব সাহেব, আমি যখন নানা দেশে ময়ূখের সন্ধান করিয়া বেড়াইতে ছিলাম, তখন সে এই নগরেই ছিল। আমি যখন হতাশ হইয়া আগ্রা ত্যাগ