পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৪২
ময়ূখ

 অন্তঃপুরে আকবর ও জাহাঙ্গীরের আমলে এক বেগমের মহল হইতে অন্য বেগমের মহলে যাইবার বহু গুপ্ত পথ নির্ম্মিত হইয়াছিল। শাহ্‌জহানের আমলে আরজ্‌ মন্দ বাণু বেগম ব্যতীত মহল সরার অন্য কোন অধিবাসিনী না থাকায়, গুপ্তপথ ব্যবহৃত হইত না। যোধবাই মহলের পশ্চাতে বাদশাহ্‌ বেগমের হামামের নিম্নে একটি গুপ্ত গৃহ আছে। এই গৃহে এখনও একটি বধমঞ্চ দেখিতে পাওয়া যায়। কোনও অন্তঃপুরচারিণী রীতিবিরুদ্ধ আচরণ করিলে, বাদশাহ্‌ অথবা প্রধানা বেগম এই গৃহে তাহাকে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করিতেন। মোগল সাম্রাজ্যের যুগের ধ্বংসাবশেষ মধ্যে আগ্রা দুর্গে শ্বেত ও রক্তমর্ম্মরনির্ম্মিত বিশাল প্রাসাদের নিম্নে পথবিচলিতা অন্তঃপুরচারিণীর জীবননাট্যের শেষ অঙ্ক যে রঙ্গমঞ্চে অভিনীত হইত, তাহা এখনও দর্শকের মনে ভীতি সঞ্চার করিয়া থাকে।

 বহুদিন এই বধমঞ্চ ব্যবহৃত হয় নাই; বাদশাহের অন্তঃপুরে বহুদিন কোনও অবরোধবাসিনী স্বীয় রক্তস্রোতে স্বেচ্ছাচারের প্রায়শ্চিত্ত করেন নাই; বহু দিন সে কক্ষে কেহ প্রবেশ করে নাই। কক্ষ আবর্জ্জনাময়, গৃহতল ধুলায় আচ্ছন্ন, বহুদিন পরে সহসা সেই অন্ধকার গৃহ বহু মশালের আলোকে উজ্জ্বল হইয়া উঠিল। চারিজন খোজা ময়ূখকে লইয়া সেই কক্ষে প্রবেশ করিল। তাহাদিগের সম্মুখে পাঁচজন ও পশ্চাতে পাঁচজন তাতারী প্রতিহারী মশাল হস্তে প্রবেশ করিল, পরে গুলরুখ্‌ ও জহানার বেগম আসিলেন। সর্ব্বশেষে কুঠার হস্তে এক