দেবতাকে বহু যন্ত্রণা দিয়াছি। মোহের বশে কুপরামর্শে শয়তান ও শয়তানীর সাহায্যে, ইঁহাকে মাতার বাসস্থানে আনিয়াছিলাম।”
“কাহার পরামর্শে আনিয়াছিলে গুলরুখ্?”
“এই চক্ষুর, পিতা, এই চক্ষুই আমার কাল। কেহ অপরাধী নহে। গুল্জার, ইরাদৎ, হিম্মৎ, হিলাল, মেহেদী বা শাহ্জাদী কেহ অপরাধী নহে। অপরাধ আমার চক্ষুর। সুদূর সপ্তগ্রামে ঐ দেবদুর্ল্লভ রূপ আমার নয়ন অন্ধ করিয়া দিয়াছিল, সেই অন্ধতার বশবর্ত্তী হইয়া বহু অপরাধ করিয়াছি। শাহান্শাহ, আজি আপনার সাক্ষাতে দোষীর দগুবিধান করিব।”
গুলরুখ্ ক্ষিপ্র হস্তে বস্ত্রমধ্য হইতে দুইটি তীক্ষ্ণধার লৌহ শলাকা বাহির করিয়া নয়নদ্বয়ে বিদ্ধ করিল, মুহূর্ত্ত মধ্যে নীলেন্দীবরতুল্য উজ্জ্বল নয়নদ্বয় হীনপ্রভ হইয় গেল। তখন যুবতীর পাণ্ডুবর্ণ মুখমণ্ডলে ম্লান হাস্যের ক্ষীণ রেখা ফুটিয়া উঠিল, গুলরুখ্ বলিল, “আর দেখিব না, কিন্তু, প্রভু, অন্ধের নয়নপথে তোমার শান্ত স্নিগ্ধ সুন্দর মূর্ত্তি সতত বিরাজ কৱিবে।“
দৃষ্টিশক্তিহীনা রমণী আরজ্ মন্দ বাণু বেগমের দিকে হস্তদ্বয় প্রসারিত করিল এবং কহিল, “মা, তুমি কোথায় মা?”
বেগম গুলরুখের রক্তাপ্লুত দেহ আলিঙ্গনপাশে আবদ্ধ করিয়া রোদন করিয়া উঠিলেন। বাদশাহ্ স্তম্ভিত হইয় দাঁড়া-