“মন্সবদার, এ কোন্ ভাষার গান?”
“জনাব আলী, ইহা বাঙ্গালা গান।”
“আওয়াজ বড়ই মিঠা, তুমি উহাকে ডাকিয়া আনিতে পার?”
ময়ূখ ললিতার দিকে চাহিলেন, বাদশাহ্ তাহা দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমার সঙ্গে কে?”
ময়ূখ অবনত বদনে কহিলেন “শাহান শাহ্ আমার স্ত্রী।
বাদশাহ কহিলেন, “তোমার স্ত্রী আসিয়াছেন কেন?”
“হজরৎ বাদশাহ্ বেগমের সমাধির ধূলা লইয়া যাইতে।”
“নিকটে আসিতে বল, উঁহাকে গুলরুখের কাছে রাখিয়া তুমি গায়ককে ডাকিয়া আন।”
তখন ময়ূখের দৃষ্টি জীর্ণ শীর্ণ মলিনবসনাচ্ছাদিতা দৃষ্টিশক্তিহীনা রমণীর দিকে আকৃষ্ট হইল। তিনি দেখিলেন যে, রমণী উঠিয়া দাঁড়াইয়াছে; মণিহারা কোটরগত নয়নদ্বয় বিস্ফারিত হইয়াছে; ঘন ঘন শ্বাস প্রশ্বাস বহিতেছে। সে কখন উঠিয়া দাঁড়াইয়াছে তাহা তাঁহার দৃষ্টিগোচর হয় নাই। তিনি যখন বাদশাহের সহিত কথা কহিতেছিলেন, তখন অন্ধের শ্রবণপথে তাঁহার কণ্ঠস্বর প্রবিষ্ট হইয়া তাহাকে বিচলিত করিয়া তুলিয়াছিল। বাদশাহের সহিত বাক্যালাপ করিতেছিলেন বলিয়া, গুলরুখ্ এতক্ষণ কথা কহেন নাই। সে কি বলিবার জন্য উৎকণ্ঠিতা হইয়াছিল। বাদশাহের উক্তি শেষ হইলে, গুলরুখ্ বলিয়া উঠিল, “দেবতা, তোমার রূপরাশির মধ্যে এত কঠোরতা