পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ
১৭৭

লুক্কাইয়া ছিল, তাহা জানিতাম না। তুমি আবার কেন আমার নিকটে আসিয়াছ?”

 ময়ূখ বিস্মিত ও স্তম্ভিত হইয়া রহিলেন। গুলরুখের মস্তকের আবরণ খসিয়া পড়িল, রুক্ষ তৈলহীন কেশরাশি, রক্তহীন, জ্যোতিহীন, পাণ্ডুবর্ণ মুখমণ্ডলের চারিপার্শ্বে উড়িয়া বেড়াইতে লাগিল। দৃষ্টিশক্তিহীনা পুনরায় বলিয়া উঠিল, “দেবতা, আমার অন্ধকারময় জগতে তুমি একমাত্র আলোক, তোমার মূর্ত্তি সর্ব্বদা আমার দৃষ্টিশক্তিহীন নয়নের সম্মুখে চিত্রিত রহিয়াছে, কিন্তু তুমি নিকটে আসিও না, দূরে থাকিও। তোমার কণ্ঠস্বর বা পদশব্দ শুনিলে আমি উন্মাদ হইব।”

 বাদশাহ্‌ অস্ফুট স্বরে তাহার কর্ণমূলে কি কহিলেন। তাহা শুনিয়া গুলরুখ্‌ শিহরিয়া উঠিল, সে কহিল, “কই? কোথায় তুমি? কোন্‌ দিকে?”

 গুলরুখ্‌ উভয় হস্ত প্রসারিত করিয়া কহিল, “তোমাকে একবার দেখিব, নয়ন থাকিতে দেখি নাই, একবার স্পর্শ করিব। বহিন্‌ তাহাতে কি তুমি অপবিত্র হইবে?”

 বাদশাহ্‌ কহিলেন, “মন্‌সবদার, গুলরুখ্‌ তোমার পত্নীকে স্পর্শ করিতে চাহে।”

 ময়ূখের অনুমতিপ্রাপ্তির পূর্ব্বেই ললিতা গুলরুখের দিকে অগ্রসর হইলেন। তাহার পদশব্দ শুনিয়া গুলরুখ্‌ দুইপদ অগ্রসর হইল এবং ললিতাকে স্পর্শমাত্র নিবিড়