পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
১৩

ধরিয়া লইয়া গিয়াছে। আহা! মা আমার আর নাই! জগতে এমন কে আছে যে পরাক্রান্ত দস্যুর হস্ত হইতে তাহাকে উদ্ধার করিয়া আনিবে?”

 পশ্চাৎ হইতে ধ্বনিত হইল, “আছে, যে প্রকৃত রাজা সে তোমার কন্যা উদ্ধার করিতে গিয়াছে।” সকলে ফিরিয়া দেখিলেন যে, দূরে পনস তরুতলে একজন দীর্ঘাকার গৈরিকবসন-পরিহিত সন্ন্যাসী দাঁড়াইয়া আছেন। সন্ন্যাসী পুনর্ব্বার কহিলেন, “গোস্বামী, গৃহে ফিরিয়া যাও, তোমার কন্যা ফিরিয়া আসিবে। আজ দেবেন্দ্রনারায়ণ নাই, কিন্তু তাহার পুত্র আছে; যে উত্তর রাঢ়ের প্রকৃত অধীশ্বর সে দস্যুর দণ্ডবিধান করিতে গিয়াছে। ফিরিয়া যাও, গৃহ-দেবতার নিকটে তাহার মঙ্গল কামনা কর।”

 সন্ন্যাসী উত্তরের প্রতীক্ষা না করিয়া প্রস্থান করিলেন, গ্রামবাসিগণ স্তম্ভিত হইয়া রহিল। কিয়ৎক্ষণ পরে রুধিরাপ্লুতদেহ বৃদ্ধ ভূবন ধীরে ধীরে আসিয়া তর্করত্নকে প্রণাম করিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “ঠাকুর, আমাদের মহারাজকে দেখিয়াছেন?” তর্করত্ন বিস্মিত হইয়া কহিলেন, “না। ভুবন, তুমি আঘাত পাইলে কোথায়?” “ফিরিঙ্গীর সহিত যুদ্ধে।” “কখন?” “দুই দণ্ড পূর্ব্বে, ঠাকুরের কন্যাকে উদ্ধার করিতে গিয়া।” “মহারাজ কোথায়?” “তিনিও আহত হইয়াছেন। ধনু ও তীর লইয়া যতক্ষণ বন্দুকের সহিত যুদ্ধ সম্ভব ততক্ষণ দুই জনে যুঝিয়া ছিলাম। তিনি অজ্ঞান হইয়া নৌকায় পড়িয়া গেলে, আমি নৌকা