পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২২
ময়ূখ

ছিপ কাঁপিয়া উঠিল, প্রৌঢ় কক্ষের দীপ নিবাইয়া ত্রস্ত পদে বাহিরে আসিলেন এবং দেখিলেন যে, দূরে কোশার ন্যায় এক খানি বৃহৎ নৌকা অন্ধকারে দাঁড়াইয়া আছে। তাঁহাকে বাহির হইতে দেখিয়া কেনারাম তাঁহার নিকটে আসিল এবং কহিল, “হুজুর, ফিরিঙ্গি হার্‌মাদ বোধ হয় পিছু লইয়াছে, গোলা লাগিয়া একজন মাল্লা মরিয়াছে।”

 প্রৌঢ় কহিলেন,—“আমাদের তোপ প্রস্তুত আছে ত?”

 “আছে, কিন্তু তাহার গোলা অতদূর পৌঁছিবে না।” “তবে শীঘ্র নৌকা ফিরাও।” মুহূর্ত্ত মধ্যে ছিপ ফিরিল এবং উত্তরাভিমুখে চলিতে আরম্ভ করিল। তখন প্রৌঢ় ময়ূখকে কহিলেন, “ঠাকুর, এ অত্যাচার আর সহ্য হয় না,—এইবার আমি স্বয়ং অস্ত্র ধরিব।” ময়ূখ বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন—“আপনার উপরে কে অত্যাচার করিয়াছে?” পর্ত্তুগীজ বণিক্‌ অথবা দস্যু।““পর্ত্তুগীজ বণিক্‌ কি দস্যু?” “ইহারা যখন সুবিধা পায় তখন বাণিজ্য করে এবং যখন অবসর বুঝে তখন লুঠ তরাজ করে।” “ফৌজদার ইহাদিগকে শাসন করেন না কেন?” “পারেন না বলিয়া।” “সুবাদার কি এ সকল কথা জানেন না?” “ভিতরে আসুন বলিতেছি।”