পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫৪
ময়ূখ

আনিলেন। সওয়ার অভিবাদন করিয়া দাঁড়াইল, নবাব তিন পদ অগ্রসর হইয়া তিনবার কুর্ণিশ করিলেন, একজন হরকরা একখানি রজতের পাত্র আনিয়া নবাবের হাতে দিল এবং কুর্ণিশ করিয়া প্রস্থান করিল। নবাব রজত পাত্র সহিত বাদশাহের পত্র দেওয়ানের হাতে দিয়া কহিলেন, “হরেকিষণ, মুরসলা বজরাই লইয়া যাও, কিল্লার ভিতরে অত্যন্ত গ্রীষ্ম।” বজরার নাম শুনিয়া দেওয়ানের হৃৎকম্প উপস্থিত হইল। হরেকৃষ্ণ কম্পিত পদে অগ্রসর হইয়া কহিলেন, “হুজুর?” নবাব বিরক্ত হইয়া কহিলেন, “কি বলিতেছ?”

 “আমার গুরুদেব বড় বিপদে পড়িয়া জহাঙ্গীর নগরে আসিয়াছেন; জনাবালীর হুকুম পাইলে তাঁহাকে হজরতের সম্মুখে উপস্থিত করিতে পারি।”

 “তোমার গুরু কি চায়?” “তিনি হজরতের সম্মুখে উপস্থিত হইয়া নিজে আরজ পেশ করিবেন।” “সে কোথায়?” “এই খানেই আছেন।” “লইয়া আইস।”

 তখন সন্ন্যাসী স্তম্ভের অন্তরাল হইতে বাহির হইয়া কহিলেন, “ভগবান্‌ নবাবের মঙ্গল করুন।” নবাব দেওয়ানকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “হরেকিষণ, তোমার মুর্‌শিদ্‌ কি ফকীর?” হরেকৃষ্ণ সেলাম করিয়া কহিলেন, “হুজুর।” “দেওয়ানা ফকীরের সুবাদারের নিকট কি প্রার্থনা থাকিতে পারে?”

 সন্ন্যাসী অগ্রসর হইয়া কহিলেন, “আমার প্রার্থনা আপনার জন্য।” নবাব বিস্মিত হইয়া কহিলেন, “আমার জন্য? কাফের,