পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
দশম পরিচ্ছেদ
৬৭

য়াছে।” “সে কি কাফের না মুসলমান?” “সে যুবা কাফের; হতভাগ্য হয় নিহত হইয়াছে, না হয় বন্দী হইয়াছে।” “ফিরিঙ্গির হস্তে বন্দী হওয়া অপেক্ষ মৃত্যু শতগুণে শ্রেয়ঃ।” “খোদা মালিক নুরউদ্দীন জহাঙ্গীর বাদশাহের রাজ্যে এ অত্যাচার অসহ্য। একটা প্রলেপ পাঠাইয়া দিব তাহা ক্ষতস্থানে লেপন করিবেন; দুই প্রকার ঔষধ আসিবে, তাহা প্রতি প্রহরে সেব্য।” “রোগী বড়ই অস্থির, চাঞ্চল্য বাড়িলে ক্ষতস্থান হইতে রক্তস্রাব হয়।” একটা জাফ্‌রাণ বর্ণের চূর্ণ পাঠাইয়া দিব, অস্থির হইলে তাহা সরবতের সহিত মিশ্রিত করিয়া সেবন করাইয়া দিবেন।”

 হকিম প্রস্থান করিলেন। বৃদ্ধ ফিরিয়া আসিয়া যুবতীর হস্তে একটা কৌটা দিয়া কহিলেন, “মা, তোমার স্বামী অস্থির হইলে এই ঔষধের একমাত্রা সরবতের সহিত মিশাইয়া সেবন করাইও।” বৃদ্ধ কক্ষ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইলেন। যুবক এতক্ষণ নীরব ছিল, এইবার সে যুবতীকে ডাকিয়া কহিল, “ললিতা বৈদ্য দাড়ি রাখিল কবে? ব্রজনাথ সেন ত বৈষ্ণব, সে ত গোঁফ, দাড়ি,চুল সমস্তই কামাইয়া ফেলিত?” “বৈদ্য হইবে কেন? ইনি সপ্তগ্রামের প্রসিদ্ধ হাকিম, আশ্‌রফ্‌ আলী খাঁ।” যুবক হাসিল, কহিল, “তুমি কি সপ্তগ্রামের স্বপ্ন দেখিতেছ?”

 “স্বপ্ন কেন? এ ত সত্য সত্যই সপ্তগ্রাম?” যুবক বিরক্তি প্রকাশ করিয়া কহিল, “হয় তুমি পাগল হইয়াছ ললিতা,