“তবে শীঘ্র ফিরিয়া যাউন, আমিও সপ্তগ্রাম হইতে আসিতেছি। বন্দরে শুনিলাম যে, সন্ধ্যার পরে ফিরিঙ্গিদের সমস্ত ছিপ্ নৌকা লুঠিতে বাহির হইবে।”
“কাফের, তোমরা কোথায় যাইতেছ?” “হুগ্লীর বন্দরে।” “ফিরিঙ্গিরা কি তোমাদের ছাড়িয়া দিবে?” “আমরা ইচ্ছা করিয়া ফিরিঙ্গির হাতে ধন দিতে যাইতেছি।” নৌকা ছাড়িয়া দিল। বজ্রা সপ্তগ্রামের দিকে ফিরিল; তখন সন্ধ্যা হইয়াছে, কিন্তু গঙ্গাতীরে কোন গ্রামে দীপ জ্বলে নাই। গঙ্গাবক্ষ শূন্য, নিস্তব্ধ, কুয়াসায় আচ্ছন্ন। তখন সমুদ্রের জলরাশি জোয়ারের বেগে নদীতে প্রবেশ করিয়া আবার ফিরিয়া চলিয়াছে। ভীষণ স্রোতের বিপরীতে বৃহৎ বজ্রা অতি ধীরে ধীরে চলিতেছিল। সহসা অন্ধকার ভেদ করিয়া একখানি বৃহৎ ছিপ্ বজ্রার পার্শ্বে আসিয়া লাগিল, বন্দুক হস্তে চারি পাঁচজন ফিরিঙ্গি বজ্রায় উঠিল এবং নাবিকদিগকে বাঁধিয়া ফেলিল; নৌকার সমস্ত আরোহী বন্দী হইল, বজ্রা হুগলীর দিকে চলিল।
বজ্রা হুগ্লীর দুর্গের সম্মুখে পৌঁছিলে, ছিপ্ হইতে একটি হাউই ছুটিল; তাহা আকাশে উঠিলে, তাহা হইতে একটি নীল একটি লাল ও একটি শ্বেত তারকা ফুটিয়া উঠিল। তৎক্ষণাৎ দুর্গ হইতে আর একটি হাউই উঠিল, তাহা হইতেও ঐরূপ তিনটি তারা ফুটিয়া উঠিল। বজরা আবার চলিতে আরম্ভ করিল। দুর্গের সম্মুখে সেই উত্তরদেশীয় নৌকাখানি