“এই দুইজন বন্দী শয়তানের অনুচর, ইহাদিগের জন্য ভারতবর্ষের লোকে প্রকৃত ধর্ম্ম গ্রহণ করিতেছে না।”
যুবা অগ্রসর হইয়া চক্রে আবদ্ধ বৈষ্ণব ও তাহার পার্শ্বে ধূলায় ললুণ্ঠিত ব্রাহ্মণকে দেখিয়া অঙ্গুলী হেলন করিল। পাদ্রীর অনুচরদ্বয় তৎক্ষণাৎ চৈতন্যদাসের বন্ধন মোচন করিল, কিন্তু চৈতন্যদাস দাঁড়াইতে পারিল না, তাহার দেহ ধূলায় লুণ্ঠিত হইল। তাহা দেখিয়া যুবা পাদ্রীকে জিজ্ঞাসা করিল, “ইহাকে কি হত্যা করিয়াছ?” পাদ্রী কহিল, আপনি শাসনকর্ত্তা সেই জন্য সম্মান করিতেছি, আমি আমার কর্ত্তব্য সম্পাদন করিতেছি, কোনও শাসনকর্ত্তার নিকটে আমি কৃত কার্য্যের জন্য দায়ী নহি, স্বয়ং রাজাও আমার কার্য্যের হস্তক্ষেপ করিতে পারেন না। ঈশ্বরের প্রতিনিধি আমার একমাত্র প্রভু।”
“পাদ্রী, তুমি জান, ইহা স্পেন্ নহে, ইহা ভারতবর্ষ? জান যে এই দুইজন পৌত্তলিক আমাদের প্রজা নহে?” “জানি।” “তুমি জান এই হুগলী বন্দর সমর বিভাগের কর্ত্তৃত্বাধীন? তুমি জান যে এখানে তোমাদিগের আইন প্রচলিত নহে?” “জানি।” “তোমার স্মরণ আছে যে তুমি সত্য ধর্ম্ম প্রচার করিতে আসিয়াছ, নরহত্যা করিতে বা দেশ শাসন করিতে আস নাই?” “জানি।” “তবে তুমি নরহত্যা করিয়াছ কেন?” “সত্য ধর্ম্ম প্রচারের জন্য যাহা আবশ্যক তাহা করিয়াছি। ডিসুজা, এখন তুমি আমীরাল, স্মরণ রাখিও যে একদিন স্পেনে প্রত্যাবর্ত্তন করিতে হইবে।”