মরণের ডঙ্কা বাজে
খুঁজে পেলে না। একখানা জাপানী এন্, ওয়াই, কে লাইনের জাহাজ হিদ্জুমারু, উদীয়মান সূর্য আঁকা পতাকা ওড়ানো।
দুদিনের দিন রাত্রে বেসিন লাইট হাউসের আলো ঘুরে ঘুরে জ্বলতে দেখা গেল।
সুরেশ্বর সমুদ্র পীড়ায় কাতর হয়ে পড়েচে, কিন্তু বিমল ঠিক খাড়া আছে, যদিও তার খাওয়ার ইচ্ছা প্রায় লোপ পেয়েচে। সুরেশ্বর তো কিছুই খেতে পারে না, যা খায় পেটে তলায় না, দিন রাত কেবিনে শুয়ে আছে, মাথা তুলবার ক্ষমতা নেই।
জাহাজের ষ্টুয়ার্ড এসে দেখে গম্ভীর ভাবে ঘাড় নেড়ে চলে যায়।
কি বিশ্রী জিনিস এই পরের চাকুরী! এত হাঙ্গামা পোয়ানো কি ওর পোষায়? দিব্যি ছিল, বাড়ীতে খাচ্ছিল, দাচ্ছিল। চাকুরীর খাতিরে বিদেশে বেরিয়ে কি ঝকমারি দেখো তো!
বিমল কিন্তু আপন মনে ডেকে বসে বই পড়ে, স্ফূর্ত্তিতে শিস্ দেয়, গান করে। সুরেশ্বরকে ঠাট্টা করে বলে― হোয়াট্ এ গুড্ সেলার্ ইউ আর!
তিনদিন দুইরাত্রি ক্রমাগত জাহাজে চলাবার পরে তৃতীয় দিন সন্ধ্যায় এলিফেণ্ট পয়েণ্টের লাইট হাউস দেখা গেল।
বেলাভূমি যদিও দেখা যায় না, তবুও সমুদ্রের জলের ঘোর নীল রং ক্রমশঃ সবুজ হয়ে ওঠাতে বোঝা গেল যে, ডাঙা বেশী দূরে নেই। ডাঙার গাছপালা মাঝে মাঝে জলে ভাসতে দেখা যাচ্ছে।
সন্ধ্যার অল্প পরেই জাহাজ ইরাবতীর মোহনায় প্রবেশ করলে।