পাতা:মরণের ডঙ্কাবাজে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মরণের ডঙ্কা বাজে বিমল বল্লে-এ আবার কি চিজ বাবা ? ইহুর ভাজা টাজা নয় তো ? সুরেশ্বর বল্লে-ইদুর নয়, কুমড়োর বিচি, তা স্পষ্ট টের যখন পাওয়া যাচ্ছে। তবে ইদুর খাওয়া অভ্যাস করতে হবে, নইলে হরিমটির খেয়ে থাকতে হবে চীন দেশে । কিন্তু কেক্‌গুলো ওদের মন্দ লাগলো না । চা পানের পরে ওরা ংলোর চারিধারে একটু ঘুরে বেড়ালে। সিঙ্গাপুরের উপকণ্ঠে নির্জন স্থানে সমুদ্রতীরে বাংলোটী অবস্থিত । সমুদ্রের দিকে এক সারি ঝাউ অপরাঙ্কের বাতাসে সে সো করছিল। দূরে সমুদ্র বক্ষে অস্তসূৰ্য্যের আভা পড়ে কি সুন্দর দেখাচ্ছে ! সুরেশ্বর ভাবছিল হুগলী জেলার তাদের সেই গ্রাম, তাদের পুবানো বাড়ী-বাপ, মায়ের কথা । জীৰ্ণ সান বাধানো পুকুরের ঘাটের পৈঠা বেয়ে মা পুকুরে গা ধুতে নামছেন এতক্ষণ । জীবনে কি-সব অদ্ভুত পরিবর্তনও ঘটে! তিন মাস মাত্র আগে সেও এমনি সন্ধ্যায় ঐ গ্রামের খালের ধারটীতে এক পায়চারী করে বেড়াতে ও কি ভাবে কোথায় গেলে চাকুরী পাওয়া যায়। সেই ভাবনাতে ব্যস্ত থাকতো। আর আজ কোথায় কতদূরে এসে পড়েছে! বিমল মুগ্ধ হয়েছিল। এই সুদূর প্রসারী শ্যামল সমুদ্র বেলার সান্ধ্য ভার দৃশ্যে । সে ভাবছিল কবি ও ঔপন্যাসিকদের পক্ষে এমন বাংলো তো স্বৰ্গ-মাথার ওপরকার নীল আকাশ-এই সবুজ ঝাউয়ের সারি-ঐ সমুদ্রবক্ষের ছোট ছোট পাহাড়-সত্যিই স্বৰ্গ গভীর রাত্রে আ-চীন এসে ওদের ওঠালেন । একখানা মোটর আধ মাইল আন্দাজ গিয়ে সমুদ্রতীরের একটা নির্জন স্থানে ওরা জিনিষপত্ৰ সমেত ছোট একটা জালি বোটে উঠলো। দূরে বন্দরের আলোর সারি দেখা 总8