পাতা:মলিন মালা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$ჯე প্রবন্ধ-পাঠ । কোন সন্দেহ করিতে নিষেধ করিলেন । প্রথমে নাপিত আসিয়া হরিদাসের নখ, মাথার চুল, দাড়ী ও গোপ কামাইয়া দিল । হরিদাস বুঝিতে পারিয়া ছিলেন যে র্তাহার উদরে এখনও ক্লেদ আছে। এজন্য তিনি তিন অঙ্গুলি বিস্তৃত ও ষাটহাত দীর্ঘ একখানি বস্ত্র গিলিয়া ফেলিয়। সমস্ত ক্লেদ পরিষ্কার করিয়া, আনিলেন। তৎপরে তিনি হৃদপদ্মে হস্তদ্বয় রাখিয়া ধ্যানমগ্ন হইলে শিষ্যেরা তাহার চক্ষু, কর্ণ ও নাসিকায় স্বত মাখাইয় দিয়া তুলা ও মোম দ্বারা ঐ সকল ইন্দ্রিয় গথ বন্ধ করিয়া দিল । তখন হরিদাস জিহবা উলটাইয়া তালুর ভিতর প্রবেশ করাইয়া দিলেন। দেখিতে দেখিতে শ্বাস প্রশ্বাস বদ্ধ হইয় গেল । শিষ্যের হৃদয়ে হাত দিয়া দেখিল,স্পন্দন নাই এবং শরীরও শীতল হইয়া গিয়াছে। রণজিৎ দেখিয়া শুনিয়া অবাকৃ হইয়। গেলেন । তখন শিষ্যগণ সন্ন্যাসীর গাত্রে এক খানি শুভ্রবর্ণ বস্ত্র জড়াইয়া দিয়া সংযোগ স্থল সেলাই করিয়া দিলেন, এবং রণজিৎ সিংহ তাহাতে স্বনামের একটী মোহর লাগাইয়া দিলেন । রণজিৎ সিংহের কোষাধ্যক্ষ বলরাম মিশ্র এই অবস্থায় সাধুকে একটা কাষ্ঠের সিন্ধুকে পুরিয়া স্বহস্তে তাহার চাবি বন্ধ করিলেন । কুলুপের উপর আর একটী মহারাজের সিল মোহর দেওয়া হইল। অনুচরগণ সিন্ধুকট লইয়া মৃত্তিকাতে পুতিয়া রাখিল । ইহাতেও রণজিতের বিশ্বাস হইল না । তখন তিনি সমাধি-ক্ষেত্রের উপর যব বুনাইয়া ও বারদ্বারীর দ্বার ইষ্টক দ্বার গাথাইরা দিয়া চতুর্দিকে সশস্ত্র প্রহরী রাখিয়া দিলেন । মোহর ও চাবি কাহারও নিকট না রাখিয়া মহারাজ স্বয়ং তাহাদিগকে অস্তঃপুরে লইয়া গেলেন।