পাতা:মস্তকের মূল্য - সরোজনাথ ঘোষ.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূজার অর্ঘ্য। হতবুদ্ধি ব্ৰাহ্মণ কাতরভাবে সকলের মুখের পানে চাহিলেন। তাহার বোধ হইল, সকলেই যেন তঁাহার লাঞ্ছনায় আনন্দ উপভোগ করিতেছে। এই কাছারীগৃহে, এই স্থানে বসিয়া স্বৰ্গীয় প্ৰাতঃস্মরণীয় রামতারণ বাবু ধনী, দরিদ্র, সবল, দুৰ্বল, সকলের প্রতি ন্যায়-বিচার করিয়াছেন। আজ সেই পবিত্র আসনের উপর দাড়াইয়া, তাহার পুত্র ন্যায়ের মৰ্য্যাদাকে পদদলিত করিতে কুষ্ঠিত হইতেছে না ! আবেগরুদ্ধ-কণ্ঠে সৰ্ব্বানন্দ বলিলেন, “আপনার পিতা আমাকে যথেষ্ট স্নেহ করিতেন, ভালবাসিতেন । তঁহার কাছে সকলেই সুবিচার পাইত । আপনিও সুশিক্ষিত, আপনার কাছেও ন্যায়-বিচার হইবে, সেই বিশ্বাসে আমি মাল ছাড়িয়া দিয়াছিলাম। নহিলে সর্বানন্দ শৰ্ম্মাকে ভয় দেখাইয়া বা ঠকাইয়। আজ পৰ্য্যন্ত কেহ জিতিয়া যায় নাই। কিন্তু আপনি আজ আমায়ু ভাল শিক্ষা দিলেন।” সত্য চিরকালই অপ্ৰিয় । অপ্ৰিয় সত্য কথায় শচীন্দ্ৰনাথের রক্ত চঞ্চল হইয়া উঠিল । আরক্ত-মুখে, ক্রোপ-কম্পিত-কণ্ঠে সে বলিল, “তুমি চ’লে যাও, এখনই যাও। ফের। যদি কথা কও, দরোয়ান গলা ধাক্কা দিয়ে তোমায় তাড়িয়ে দেবে ।” আহত ব্যান্ত্রের ন্যায় ব্ৰাহ্মণ লাফাইয়া উঠিলেন। সুপমানে, ক্ষোভে, ক্রোধে তাহার মস্তকের শিখা কণ্টকিত হইল । তীব্ৰকণ্ঠে তিনি বলিলেন, “শচীন্দ্র বাবু, তুমি আজ আমায় যে কথা বলিলেন, যার বিষয়ের এখন তুমি মালিক, তিনিও সে রকম কথা কোনও ব্রাহ্মণকে কখনও বলিতে সাহস করেন নাই । ܫ G