পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৭৭ দশম পরিচ্ছেদ কি হৃদয়বিদারক দৃশ্য ! ঐ দেখুন, অজ্ঞানান্ধদের আজ্ঞাক্ৰমে কালান্তক যমদূতস্বরুপ নিৰ্দ্দয় জল্লাদের বিজলীবৎ চাকচিক্যশালী খরশাণ তরবারি উৰ্দ্ধে উথিত হইল। মহৰ্ষি তল্লিমে মস্তক স্থাপন করিয়া ঘাতককে বিনীতভাবে কহিলেন, “ভাই জল্লাদ, শীঘ্ৰ স্বীয় কাৰ্য্য সম্পাদন কর । শীঘ্ৰ এই মহাপাপীর—এই ঘোর অপরাধীর দণ্ড প্ৰদান কর । অামার অন্তর অহোরজনী দগ্ধ হইতেছে । যদি দেখাইবার হইত, তবে এই সমবেত বন্ধুদিগকে দেখাইতাম—জগৎকে দেখাইতাম, দেখিয়া বুধিত । অামার হৃদয়ে সুখ নাই, মনে শান্তি নাই, অন্তর অনলপূৰ্ণ—তুফানময় ! তুমি সেই জ্বলন্ত আগুন নিবাইয়া দিয়া বন্ধুর কাৰ্য্য কর ।” মহৰ্ষির বিনীত বচন শ্ৰবণমাত্ৰ নিষ্ঠর জল্লাদ অসি-প্ৰহারে তাহার পবিত্ৰ দেহ হইতে হস্তদ্বয় বিচ্ছিন্ন করিয়া ফেলিল । অমনি দুই বাহু-মূল হইতে শোণিত-ধারা উৰ্দ্ধে উচ্ছসিত হইয়া উঠিল । তাহার সুন্দর মুখমণ্ডল—অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রক্ত-রঞ্জিত হইল, রক্তপ্ৰবাহে ধরাতল কৰ্দমময় হইয়া গেল ! অহহ কি নৃশংস ব্যাপার! কি হৃদয়-বিদারক দৃশ্য ! কি ভীষণ নিষ্ঠুর কাৰ্য্য ! অকস্মাৎ যেন বিনা মেঘে বজ্ৰাঘাত হইল । তখন চতুৰ্দিক্ হইতে কত বিলাপ-ধ্বনি, কত করুণ ক্ৰন্দন-রোল অলক্ষ্যে আকাশ ছাইয়া ফেলিল। প্ৰকৃতির হাস্যভরা বদনমণ্ডলে যেন বিষাদের বিষম কালিমা-কুয়াসার সঞ্চার হইল। বিশ্ব সংসার অন্ধকারময় হইয়া গেল । অহো ! তৎকালে এই অবিচার-অত্যাচারের লীলাস্থলী বসুমতী ঘন ঘন বিকম্পিত ও