পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা হিন্দু ও মুসলমান উভয় জাতি এখন সমানভাবে ভারতের অধিকারী: বলিতে হইবে । বাস্তবিক অনাৰ্য্য হাড়ী, বাগদী, মুচী, বাউয়ী, ডোম প্ৰভৃতি এবং আদিম অধিবাসী সাওতাল, ভীল, কোলাদি জাতিকে বাদ দিলে হিন্দু-মুসলমানের সংখ্যা প্ৰায় সমান হইয়া দাড়ায় । মুসলমান ভ্ৰাতাদের ধৰ্ম্মগ্ৰন্থাদি আরবী ভাষায় লিখিত । এজন্য তাহাদের মধ্যে বাহারা শাস্ত্ৰালোচনায় প্ৰবৃত্ত, তাহারা সেই প্ৰাচীন ভাষা শিক্ষা করিয়া থাকেন । যদিও বহু মুসলমান আরব, পারস্য, তুরস্ক তাতার, কাবুল প্ৰভৃতি ভারত-বহিভূত রাজ্যসমূহ হইতে আসিয়া এদেশে উপনিবেশ স্থাপন করিয়াছিলেন, তথাপি পরবর্তী কালে তাহাদের বংশধরগণ তত্তং দেশের ভাষা ব্যবহার করেন নাই । উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে দিল্লী প্ৰস্বত উৰ্দ্দ, ভাষাই তত্ৰত্য মুসলমানদের মাতৃভাষা হইয়াছে । পক্ষান্তরে অন্যান্য প্রদেশের মুসলমানগণ আপনাদের প্ৰাদেশিক ভাষাতেই কথাবাৰ্ত্তা ও বাহিরের কাজ-কৰ্ম্ম চালাইয়া থাকেন । কিন্তু সেই ভাষাতে বুৎপত্তি লাভের চেষ্টা করেন না । তবে যাহারা সাহিত্য-জগতে খ্যাতি-প্ৰতিপত্তি অৰ্জন করিতে অভিলাষী, তাহারা উৰ্দ, ভাষার চর্চাতেই নিযুক্ত। এরুপ স্থলে বঙ্গীয় মুসলমান গণকে বঙ্গভাষাকে আপনাদের মাতৃভাষারুপে গ্ৰহণ করত তাহার উন্নতিকল্পে যত্নবান হইতে দেখিলে কাহার না আনন্দ জনিয়া থাকে ? বাস্তবিক মাতৃস্তন-পানের সহিত মানুষ যে ভাষা শিক্ষা করে ও যে ভাষায় ঘরে-বাহিরে কাজ-কৰ্ম্ম চালায়, তাহাই তাহার মাতৃভাষা এবং সেই ভাষার অনুশীলন দ্বারা উন্নতি সাধন করা সকলেরই কৰ্ত্তব্য ; নচেৎ অকৃতজ্ঞতা প্ৰকাশ পায় । সুখের বিষয়, বঙ্গীয় মুসলমান ভ্ৰাতৃ গণের অনেকে বহু দিন হইতে বঙ্গভাষার অনুশীলন করিতেছেন এবং কেহ কেহ উচ্চ শ্রেণীর গ্ৰন্থকার মধ্যে স্থানও পাইয়াছেন । তন্মধ্যে এই