পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা ‘মহৰ্ষি-মনসুর’ গ্রন্থের প্রণেতা একজন । ইনি বঙ্গ-সাহিত্যে সুপরিচিত । ইহঁর ‘মহৰ্ষি মনসুর’ গ্ৰন্থ পাঠে আমরা বিশেষ উপকার ও আনন্দলাভ করিয়াছি । কোন সঙ্কীৰ্ণ-হৃদয় গোডা হিন্দু হয়তো পুস্তকের নামকরণে ‘মহষি’ শব্দ দেখিয়া বিরক্তি প্ৰকাশ ও আপত্তি করিতে পারেন । কারণ তাহাদের ধারণা, মহৰ্ষি বলিলেই কেবল ব্যাস, বশিষ্ঠ, বাল্মীকি প্ৰভৃতি প্ৰাচীন ভারতের আধ্য মহাপুরুষগণকেই বুঝাইয়া থাকে ;—পৃথিবীর অন্যান্য জাতির মধ্যে উচ্চ শ্ৰেণীর সিদ্ধ মহাপুৰুষ থাকাটা যেন তাহারা অসম্ভব মনে করেন । তাই তাহারা মহাত্মা মনসুরকে মহৰ্ষি আখ্যা দিতে নারাজ । এরপ অনুদার মত যাহারা পোষণ করিয়া সুখ-বোধ করেন, তাহাদিগের সেই মত বা বিশ্বাস কোন ক্ৰমেই সঙ্গত ও সমীচীন নহে । ভারতবৰ্ষ ব্যতীত অন্যান্য দেশে হিন্দু-সমাজের বাহিরে অপর ধৰ্ম্মাবলম্বীদের মধ্যে বহু ঋষিকল্প মহাপুরুষ জন্মিয়া গিয়াছেন এবং এখনও আছেন। মহৰ্ষি মনসুর এক জন সেই শ্রেণীর স্বনামধন্য মহাজীব । তিনি খলিফাদের রাজধানী প্ৰাচীন বাগদাদ নগরের অদূর স্থিত একটা পল্লীতে কোন ‘সুফী-পরিবারে জন্মগ্ৰহণ করিয়াছিলেন । ‘সুফী’ শব্দের অৰ্থ তত্ত্বদশী । উহা সম্ভবতঃ গ্ৰীক ‘সোফিয়া” ( Sophia—wisdom ) শব্দ হইতে আরবী ভাষায় গৃহীত হইয়াছে। অনেক প্রত্নতত্ত্ববিদ বলেন যে, ইসলাম-ধৰ্ম্ম-প্ৰবৰ্ত্তক হজরত মোহাম্মদের জন্মের পূৰ্ব্বে আরব, তাতার, তুরস্ক প্ৰভৃতি দেশে অনেক অদ্বৈতবাদী পুরুষ বিদ্যমান ছিলেন । কালক্ৰমে উক্ত দেশসমূহে ইসলাম প্রচারিত হইলে সেই অদ্বৈতবাদীরা ইসলাম গ্ৰহণ করত ‘সুফী’ নামে অভিহিত হইয়াছিলেন । সে যাহাই হউক, অনেক গোড়া মুসলমান সুফীদিগকে ইসলামের বিরুদ্ধবাদী বলিয়া বিদ্বেষ পোষণ করেন, কিন্তু প্ৰকৃতপক্ষে