পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা তাহারা বিরুদ্ধবাদী নহেন, তাহারা ইসলামের এক উন্নত জ্ঞানী অন্তরঙ্গ সম্প্ৰদায় । তজন্য আবার অধিকাংশ মুসলমান তাহাদিগকে আন্তরিক ভক্তি ও সন্মান করেন । ইহা বোধ হয় অনেকেই জানেন যে, সকল ধৰ্ম্মেরই দুইটী বিভাগ আছে । একটী বাহ (Exoteric) এবং অপরটা অন্তরঙ্গ বা গুপ্ত ( Esoteric ) । সুফীগণ ইসলাম ধৰ্ম্মের অন্তরঙ্গ বা গুহা তত্ত্ববিদ্যায় পারদশী পুরুষ । ধৰ্ম্মজগৎ ও বিশ্বের গুঢ় রহস্য সম্বন্ধে ইহারা কেবল গুরুমুখে উপদেশ পাইয়া থাকেন । এই গুপ্ততত্ত্ব-বিদ্যায় প্রবিষ্ট লোক সকল যে কোন সম্প্ৰদায়ভুক্ত হউন না কেন, তাহারা সকলেই এক মতাবলম্বী—তাহাদের মধ্যে বিভিন্নতা নাই । ব্যোমযানারোহণে খুব উচ্চ আকাশে উঠিলে যেমন দৃষ্টির সীমা প্ৰসারিত হয়, নিম্নস্থ বাড়ী-ঘর গাছ-পালা, ক্ষেত-খোলা, পাহাড়-পৰ্ব্বত, নদ-নদী, হ্ৰদ-সরোবরাদি সমস্তই এক-ভাবাপন্ন দেখায়, কাহারও সহিত কাহারও পাৰ্থক্য অনুভব করা যায় না, এস্থলে ঠিক তাহাই ঘটে। যাহারা বাহ বিষয় লইয়াই ব্যস্ত, সুতরাং নিয়ে থাকেন, তাহারাই জড় জগতের সম্পত্তির মত ধৰ্ম্মরাজ্যের বিত্ত-বিভবকেও “এটা অামার, ওটা তোমার, সেটা তার” ইত্যাকার পাৰ্থক্যবাচক শব্দ দ্বারা পরস্পরের মধ্যে ভিন্নতা স্থাপনের প্ৰয়াস পান। কিন্তু যাহারা উচ্চে উঠিয়া অন্তরঙ্গ-নিহিত গুঢ় সত্যসমূহ লাভ করিয়া কৃতাৰ্থ হইয়াছেন, তাহারা একেবারে ভেদ-জ্ঞান-বিরহিত । এমতাবস্থায় বেদান্ত-প্ৰতিপাদ্য মহা-বাক্য ‘সোহ' এবং মহাতপা মহৰ্ষি মন্‌সুর-প্রচারিত ‘আনাল হক্‌’ যে এক-সুরে সাধা তান, তাহাতে অার বৈচিত্ৰ্য বা সন্দেহ কি আছে ? মনসুর বয়ঃপ্ৰাপ্ত হইলে সৈয়দ জুনেদ শাহের অলৌকিক জ্ঞানধৰ্ম্মের বাৰ্ত্তা শ্ৰবণে তঁাহার সমীপে গিয়া দীক্ষা গ্ৰহণ করেন । তদবধি তাহার