পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা বারণ করিয়াছিলেন । পরন্তু সেই মহাপ্ৰাণ সরল সাধুপুৰুষ হৃদয়ের বেগ সংবরণ করিতে অসমৰ্থ হইয়া বাধা মানিতে অক্ষম হইয়াছিলেন । মনসুরের হিতাকাজক্ষীমাত্ৰেই তাহাকে কত রকমে বুঝাইতে লাগিলেন । কিন্তু তিনি কাহারও কথায় কান দেন না—কেবল উৰ্দ্দনেত্ৰে ‘আনাল হক্‌” বাক্যোচ্চারণ করেন । এক দিন বহু সংখ্যক বন্ধু একত্ৰ হইয়া ভঁাহাকে ঘেরিয়া ফেলিল এবং নানা প্ৰকার ভয় দেখাইয়া নিষেধব্যঞ্জক উপদেশ দিতে লাগিল। তদুত্তরে মন্‌সুর বলিলেন,—“অামার আবার জীবনের অাশা কিসের ? অামার কি জীবন আছে ? অামি তো বহু দিন হইল জীবন বিসৰ্জন দিয়াছি ! মৃত ব্যক্তির কিসের ভয় ? যদি তোমরা বল ,—তোমার দেহ ও প্ৰাণ আছে, নতুবা কথা কহিতেছ কি প্রকারে ? কিন্তু ভাই সে দেহ ও প্ৰাণ তুচ্ছ জিনিস । যাহা এই আছে, এই নাই, তাহার আবার মূল্য কি ? সামান্য কাচখণ্ডের বিনিময়েও তাহা কেনা যায় ন । তাহার জন্য ভয় কি ? তাহার মমত্ব-তুই বা কি নিমিত্ত !” এবংবিধ নিৰ্ভীকতা প্ৰকাশ করত সকলকে স্তম্ভিত করিলেন এবং সেই ভিড়ের মধ্য দিয়া নক্ষত্ৰ বেগে বাহিরে অসিয়া অাবার সেই প্ৰাণপ্ৰিয় ‘অানাল্‌ হুকু’ শব্দ উচ্চারণ করিতে করিতে পলায়ন করিলেন । মন্‌সুরের জ্যেষ্ঠা ভগিনী এক জন তপস্বিনী ছিলেন । তিনিও এই মহাসত্য লাভ করিয়া কৃতাৰ্থ হইয়াছিলেন । কিন্তু ভ্ৰাতার ন্যায় প্ৰেমে উন্মাদিনী হয়েন নাই । তিনি মন্‌স্বরের অবস্থা দেখিয়া দুঃখ প্ৰকাশ করত ভ্ৰাতাকে একদা বলিয়াছিলেন ,—“আমি তো বেগ ধারণ করিয়া আছি, তুমি কেন এরুপ ক্ষেপিলে ? আমি বিশ বৎসর এই তত্ত্বসুধা পান করিতেছি, কিন্তু কখন মুহূৰ্ত্তের নিমিত্তও তো বিচলিত হই নাই!” কে