পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহৰ্ষি মনসুর ১৮৮ এইরাপে দেখিতে দেখিতে ক্ৰমেই শিশুর জ্ঞান বিকাশ হইয়া, জিহবার জড়তা কাটিয়া গিয়া, মৃদু মধুর আধ আধ ভাষা দূরীভূত হইয়া বাক্যোচ্চারণ পূৰ্ণতা প্ৰাপ্ত হইল। তখন বিজ্ঞ পিতা পুত্রের বিদ্যাশিক্ষাৰ্থ দেশের প্রথানুসারে মনসুরকে বিদ্যালয়ে নিযুক্ত করিতে অভিলাষ করিলেন । কিন্তু কি এক অনিবাৰ্য্য কারণ বশতঃ তিনি সপরিবারে বাসভূমি পরিত্যাগ করিয়া অন্য স্থানে যাইতে বাধ্য হইলেন । এই স্থানে হোসেন মনসুরের বিদ্যাশিক্ষার সূত্ৰপাত হয়, কিন্তু তাহার শিক্ষার পরিণতি হইয়াছিল সোস্তরে । সোস্তর-নিবাসী মহাত্মা সহল-বিন-আৰব দুল্লাহ তৎকালে সুপণ্ডিত ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানসম্পন্ন আদৰ্শ পুরুষ ছিলেন । তাহার সাধুতা ও শাস্ত্ৰাভিজ্ঞতা চরমোৎকৰ্ষ লাভ করিয়াছিল । মনসুর সেই সুধী পুরুষের নিকট আসিয়া আন্তরিক যত্ন ও প্ৰগাঢ় মনোযোগের সহিত অধ্যয়ন করিতে লাগিলেন । বয়োবৃদ্ধি সহকারে শিক্ষাগুণে যেমন তাহার বুদ্ধিবৃত্তি পরিমাৰ্জিত হইতে চলিল, সেই সঙ্গে সঙ্গে তদীয় অন্তরে ঈশ্বর-প্ৰীতি, সত্যনিষ্ঠা, গাম্ভীৰ্য্য ও ধৰ্ম্মচিন্তা ক্ৰমশঃ প্ৰবলরাপে পরিবদ্ধিত হইতে লাগিল । তিনি এমনই অসাধারণ প্ৰতিভাশালী, শান্তশীল ও স্মৃতিধর ছিলেন যে, সেই অনন্যদুস্কর প্রজ্ঞাপ্ৰভাবে অষ্টাদশ বৎসর বয়ঃক্ৰমকালেই ধৰ্ম্মবিষয়ক বহুবিধ গ্ৰন্থ পাঠ করিয়া অসাধারণ মনীষাসম্পন্ন পণ্ডিত বলিয়া প্ৰসিদ্ধি লাভ করিলেন । অতঃপর হোসেন মনসুর শিক্ষাগুর সহল-বিন- আবদুল্লার সংসৰ্গ ত্যাগ করিয়া ইরাকে-আরবীর দিকে প্ৰস্থান করিলেন ।