পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহৰ্ষি মনসুর জাগরিত হইয়া সে স্বৰ্গীয় শোভা-সমৃদ্ধি—সে সভ্যগণ সমাবেশাদির আর কিছুই দেখিতে পাইলেন না । কিন্তু সেই সুর-সভা ও তাহার সভ্যবৃন্দের ক্ৰিয়াকলাপ তদীয় হৃদয়-ফলকে প্ৰতিফলিত হওয়ায় এবং মানস-যন্ত্ৰে প্ৰতিঘাত করায়, তিনি তখনও যেন তৎসমুদয়ের জীবন্ত বিদ্যমানতা উপলব্ধি করিতে লাগিলেন । পরন্তু সচৈতন্য ব্যক্তির এ মোহ—এ মরীচিকাময় ভাব আর কতক্ষণ থাকিতে পারে ? তিনি ক্ষণকাল পরেই শয়নকক্ষের নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করিয়া হা-হুতাশ ছাড়িয়া অাক্ষেপ করিতে লাগিলেন । তাহার গণ্ডস্থল ভাসাইয়া দরদরধারে প্ৰেমাশ্ৰ বিগলিত হইতে লাগিল । কিন্তু কি করিবেন ?—হাত নাই। অবশেষে হতাশ-মলিন-মুখে প্ৰেম-গদগদ ভাষে পুনৰ্ব্বার তিনি “হক্—হক্‌, আনাল হক্‌” বলিয়া উচ্চধ্বনি করিয়া উঠিলেন । ( শরিয়ভ ) । প্ৰধান স্তম্ভ পয়গম্বর প্রধান হজরত স্বয়ং, তিনি অন্যান্য ধাৰ্ম্মিকগণের সহিত উহা মন্তকে ধারণ করিয়া যত্নে রক্ষা করিতেছেন । সুৰ্য্যোক্তাপে তপ্ত ( অৰ্থাৎ ধৰ্ম্মভ্ৰান্ত) নরগণ ইহার সুশীতল ছায়ায় আশ্ৰয় লইলে অৰ্থাৎ শান্তিপ্ৰদ সনাতন ইসলাম ধৰ্ম্ম অবলম্বন করিলে অস্তিমে পরিত্ৰাণ পাইয়া পরম সুখের অধিকারী হইয়া থাকে । ধৰ্ম্ম-বিগৰ্হিত উক্তি ‘আনাল হক্‌’ মনসুর কত্ত্বক উচ্চারিত হওয়ায় বস্ত্ৰাবাসের ( ইসলাম ধৰ্ম্মে ) এক স্থানে ছিদ্রস্বরুপ প্ৰকটিত হইয়াছে । ঐ ছিদ্র অবরোধাৰ্থ অনেকে অনেক চেষ্টা করিয়া অৰ্থাৎ মনস্বরকে ‘আনাল হক্‌’ বলিতে নিষেধ করিয়া অকৃতকাৰ্য্য হইলেন। সেই জন্য কথিত হইয়াছে যে, যদবধি হোসেন মন্‌হী স্ব-ইচ্ছায় ছিদ্রপথে স্বীয় শিরস্থাপন না করিবেন অৰ্থাৎ ‘শরিয়ত-নিষিদ্ধ ‘আনাল হকৃ’ উচ্চারণে ক্ষান্ত না হইবেন, অথবা আত্ম-বিসৰ্জন না করিবেন, তদবধি উহা অপরের সহস্ৰ চেষ্টায় কিছুতেই রুদ্ধ (তিনি উহা উচ্চারণে কিছুতেই নিবৃত্ত ) হইবার নহে ।