পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।

 কুঠরীর ভিতরে শয়নের জন্য তিন ইঞ্চি উঁচু চারিপায়া কাঠের চৌকি দেওয়া হইত। প্রত্যেক কয়েদীকে, দুইখানি কম্বল, একটি ছোট বালিশ, এবং পাতিবার জন্য একটি ‘চাটাই’ দেওয়া হইল। কখনও বা তিনখানি কম্বল মিলিত,—তবে তাহা অনুগ্রহ হইলে। দেখা যাইত, এইরূপ শক্ত বিছানা দেখিয়া কেহ কেহ অস্থির হইয়া পড়িতেন। সাধারণতঃ যাঁহাদের নরম বিছানায় শোয়া অভ্যাস, তাঁহাদের পক্ষে এইরূপ শয্যা কষ্টকর। আয়ুর্ব্বেদে কিন্তু শক্ত শয্যাই ভাল বলা হইয়াছে। অতএব গৃহে যদি শক্ত শয্যায় শয়ন করার অভ্যাস থাকে তুবে আর ‘কারাশয্যা কষ্টদায়ক হইয়া উঠে না। ঘরে সর্ব্বদা এক ঘড়া জল ও রাত্রে প্রস্রাব করিবার জন্য একটু জল আলাদা রাখা হইত, কারণ রাত্রে কোনও কয়েদীই বাইরে যাইতে পারিত না। প্রত্যেক লোকের প্রয়োজন অনুযায়ী অল্প একটু সাবান, মোটা সুতার একখানা তোয়ালে এবং একটী কাঠের চামচও দেওয়া হইত।

পরিষ্করণ।

 জেলে পরিষ্কার করাটা খুব ভাল হইত। কুঠুরীর মেঝে সর্ব্বদা ফিনাইল দিয়া ধোয়া হইত, এবং প্রত্যহই চুণ ছড়াইয়া দেওয়া হইত। সর্ব্বদাই মনে হইত—যেন সব নূতন। স্নানঘর ও পায়খানাও সাবান ও ফিনাইল দিয়া নিত্য পরিষ্কার করিত। এই পরিষ্কার করার কাজটা আমার নিজের খুব ভাল লাগিতা। যদি কোনও সত্যাগ্রহী কয়েদীর পেটের অসুখ হইতে, তবে আমি নিজে ফিনাইল দিয়া পায়খানা সাফ করিতাম। পায়খানা পরিষ্কার করিবার জন্য প্রত্যহ নয়টার সময় কত চীনী কয়েদী অসিত। ইহার পরে দিনে অন্য কোনও সময়ে পায়খানা পরিষ্কার করার প্রয়োজন হইলে নিজে হাতে করিতে হইত। প্রস্তর নির্ম্মিত চৌবাচ্চা সর্ব্বদা ধোওয়া হইত। শুধু একটা