পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী

কিন্তু আমি তা নিজেই রাজি হইয়া চুল কাটাইতে চাই।” তাহার উত্তরে তিনি আমায় গবর্ণরের নিকট আবেদন করিতে বলিলেন। পরদিন গভর্ণর অনুমতি দিলেন কিন্তু বলিলেন- 'দুই মাসের এই ত’ সবে দুই দিন হইয়াছে, এরই মধ্যে তোমার চুল কাটানর,অধিকার আমার নাই। আমি বলিলাম —'তাহা আমি জানি। কিন্তু আমি নিজের আরামের জন্য স্বেচ্ছায় চুল কাটাইতে চাই'। তখন তিনি হাসিয়া নিষেধ প্রত্যাহার করিয়া লইলেন। পরে আমি জানিতে পারিয়ছিলাম যে, আমার অনুরোধের মধ্যে কোন রহস্য ছিল। কিনা সে বিষয়ে গবর্ণর সাহেবের অনেকখানি ভয় ও সন্দেহ হইয়াছিল। আমার শির মুণ্ডন করিলে ও শ্মশ্রু কাটলে কোন জোর জবরদস্তীর অভিযোগের গোলমাল আমা হইতে উঠিবে না ত? কিন্তু আমি বার বার বলিয়াছিলাম যে তাহ উঠিবে না, এমন কি ইহাও বলিয়াছিলাম যে আমি লিখিয়া দিতেছি যে আমি স্বেচ্ছায় চুল কাটিতেছি। তখন গবর্ণরের সন্দেহ দূর হয় এবং তিনি দারোগার প্রতি মৌখিক আদেশ দেন যে আমাকে যেন একটী কঁচি দেওয়া হয়। আমার সঙ্গী কয়েদী মিঃ পি, কে, নায়ডু চুল কাটিতে জানিতেন। আমিও নিজেও অল্প স্বল্প কিছু জানিতাম। আমাকে, চুল ও শ্মশ্রু কাটিতে দেখিয়া ও তাঁহার কারণ বুঝিতে পারিয়া অন্যান্য সকলেও তাঁহাই করিল। মিঃ নায়ডু ও আমি প্রত্যহ প্রায় দু’ ঘণ্টা করিয়া ভারতবাসিগণের চুল কাটিতাম। আমার ধারণা, ইহাতে আরাম ও সুবিধা দুইই আছে। এ ভাবে কয়েদীদের চেহারাও দেখিতে ভাল হইত। জেলে ক্ষুর রাখা একেবারে কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ছিল, শুধু কঁচি রাখা চলিত।

পর্য্যবেক্ষণ।

 কয়েদীদের পর্যবেক্ষণের জন্যে ভিন্ন ভিন্ন কর্ম্মচারী আসিতেন, তীহাদের আসিবার সময় সকল কয়েদীকে এক পংক্তিতে দাড়াইতে হইত এবং কর্ম্ম