পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী
১৭

খারাপ হইত। তাহা আমরা রন্ধন করিয়া লইবার আজ্ঞাও গ্রহণ করিলাম। প্রথম দিন মিঃ কডবা রন্ধন করিতে গেলেন। তাহার পর মিঃ থম্বী নায়ড়ু ও মিঃ জীবন, ইঁহারা দুই জন রন্ধন করিতে যাইতেন। শেষাশেষি এই দুই ভদ্রলোককে প্রায় ২০০ জনের জন্য রন্ধন করিতে হইত। রন্ধন এক বেলাই হইত। সপ্তাহে দুই দিন তরকারির বার আসিত, তখন দুই বারই রন্ধন করিতে হইত। মিঃ থম্বী নায়ড়ু খুবই খাটতেন। সকলকে ভাগ করিয়া দিবার ও পরিবেশন করিবার ভার আমার উপর ছিল।

 পূর্বোক্ত আবেদন পত্রে, এমন কথা বলা হয় নাই যে শুধু আমাদেরই জন্য ভোজনের পৃথক ব্যধস্থ করা হউক, বরং ভারতবাসী সকল কয়েদীর জন্যই ব্যবস্থা করিবার প্রার্থনা তাহাতে জানান হইয়াছিল। গভর্ণরের সহিত এই কথাই হইয়াছিল এবং তিনি অনুমতিও দিয়াছিলেন। তখন আশা করা যাইতে পারে যে জেলে ভারতীয় কয়েদিদের আহারের পরিবর্ত্তন হইবে। তাহা ছাড়া, চীনা কয়েদী তিনজনের চাউলের পরিবর্ত্তে অন্য খাদ্য পাওয়া যাইত। তাহাতে অসন্তোষ বাড়িয়া উঠিত এবং ইহাও অনেকে মনে করিতেন যে চীনারা বুঝি আমাদের অপেক্ষা হীন। সুতরাং তাঁহাদের পক্ষ হইতে আমি গভর্ণর ও মিঃ প্লেফোর্ডের নিকট আবেদন করিলাম। শেষে অনুমতি পাওয়া গেল, যে চীনারাও ভারতীয়দের মত খাদ্য পাইবে।

 যুরোপীয়দের যেরূপ খাদ্য মিলিত এইবার সে কথা বলিব। তাঁহাদের সকলকে জল খাবারের জন্য আট আউন্স রুটী ও ‘পূপূ’ সকাল বেলায় দেওয়া হইত। দ্বিপ্রহরে আহারের সময় সর্ব্বদাই রুটী ও সুরুয়া(ঝোল) বা রুটী ও মাংস এবং আলু বা অন্য কোন তরকারি দেওয়া হইত। রাত্রে প্রত্যহই রুটী ও ‘পূপূ’, অর্থাৎ তাহারা তিনবার রুটী পাইতেন সুতরাং ‘পূপূ’র জন্য তাঁহাদের বড় বেশী আগ্রহ ছিল না। পাওয়া যায় তা ভাল, না