পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।
২১

বাহিরে শুইতে যাইত। কিন্তু তাহারা সকালে আবার ফিরিয়া আসিলে বারান্দা ভরিয়া যাইত। একটুও যায়গা থাকিত না। এই অল্প স্থানে কয়েদীদের থাকিতে অতি কষ্ট হইত। তাহা ছাড়া নিজ নিজ অভ্যাস মত লোকে এধারে ওধারে থুতুও ফেলিত। তাহাতে দুর্গন্ধ ছড়াইয়া পড়িত এবং অসুখ হইবার ভয়ও থাকিত। সৌভাগ্য এই যে আমি বুঝাইয়া দিলে লোকে শুনিত এবং বারান্দা পরিষ্কার করিবার সময় তাহারা আমাদের সহায়তা করিত। যাহাতে কাহারও রোগ না হয় সেই জন্য বারান্দা ও পায়খানা পরিষ্কার করার উপর আমাদের খুব সতর্ক দৃষ্টি ছিল। এতগুলি কয়েদীকে এই অল্প স্থানে রাখা সরকারের অন্যায়, ইহা সকলেই স্বীকার করিবেন। স্থান যখন অল্প তখন সরকারের কর্ত্তব্য ছিল যে সেখানে যেন এত কয়েদী না পাঠান হয়। যদি এই আন্দোলন বেশী দিন এবং বেশী জোরে চালান যাইত, তাহা হইলে সরকার কখনই বেশী কয়েদীদের একত্র জড় করিতে পারিতেন না।

পঠন পাঠন।

 আমি প্রথমেই বলিয়াছি যে গভর্ণর আমাদিগকে জেলে টেবিল দিবার হুকুম দিয়াছিলেন, সঙ্গে সঙ্গে দোয়াত কলমও পাওয়া গিয়াছিল। জেলের সংশ্লিষ্ট একটা লাইব্রেরীও ছিল। কয়েদীরা সেখান হইতে পুস্তক পাইত। সেখান হইতে আমি কার‍্লাইলের গ্রন্থ এবং বাইবেল লইয়াছিলাম। এক জন চীনা দ্বিভাষী ছিলেন তিনি প্রথমেই ইংরেজী কোরাণ শরিফ; হক্সলের বক্তৃতা; বার্ণস, জন‍্সন্ এবং স্কটের জীবনী (কার‍্লাইলকৃত) এবং বেকনের নীতি বিষয়ক প্রবন্ধ লইয়া রাখিয়াছিলেন। আমার নিজের পুস্তকের মধ্যে নিম্নলিখিত পুস্তকগুলি আমার কাছে ছিল। মনিলাল নাথুভাই কৃত টীকাসমেত গীতা, কয়েকখানা তামিল পুস্তক, মৌলবী সাহেব