পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
কারাকাহিনী।

পাদরী আসেন। কাফ্রিদের নিজেদের কোন ধর্মমন্দির নাই, তাই তাহারা জেলের ময়দানেই বসিত। ইহুদিদের জন্য তাহাদের পাদরী আসিতেন। কিন্তু হিন্দুমুসলমানে জন্য কোন বন্দোবস্ত নাই। অবশ্য ভারতীয় কয়েদীর সংখ্যা এখানে বড় বেশীও নয়, তথাপি তাহাদের ধর্ম্মশিক্ষার জন্য জেলে কোনও বন্দোবস্ত নাই ইহা তাহাদের হীনতারই পরিচয়। যতক্ষণ একটীও ভারতীয় কয়েদী থাকে, ততক্ষণ এ বিষয়ে পরামর্শ করিয়া দুই জাতির ধর্ম শিক্ষার ব্যবস্থা করা চাই। যে মৌলবী ও যে হিন্দুধর্ম্মীগুরু এই কর্মে নিযুক্ত থাকিবেন তাদের পবিত্র হওয়া দরকার নতুবা শিক্ষার কুফল হওয়াই সম্ভব।

শেষকথা।

 যাহা কিছু জ্ঞাতব্য তাহার অধিকাংশই উপরে বর্ণনা করা হইয়াছে। জেলখানায় ভারতীয়দিগকে কাফ্রিদের সঙ্গে একত্র রাখা হয় এবং একত্র গোনা হয়, একথা ভাবিয়া দেখা দরকার। শ্বেতাঙ্গ কয়েদীদের শুইবার খাটিয়া জোটে, দাঁত মাজিবার দাঁতন, নাকমুখ সাফ্ করিবার তোয়ালেও তাহারা পায়। অন্যান্য কয়েদীদের ভাগ্যে এসব কেন জোটে না, তাহা খোঁজ করিয়া দেখা দরকার। “এ সব খবরে আমার কি প্রয়োজন, আমি মাথা ঘামাইতে যাই কেন” একথা মনে করা উচিত নয়। বিন্দু বিন্দু মিশিয়া সিন্ধু হয়। এই প্রবাদ অনুযায়ী বলিতে পারা যায়, অতি সামান্য কথায়ও নিজের মান বাড়ে এবং কমে। “যাহার মান নাই তাহার ধর্ম্মও নাই” আরবী গ্রন্থে এমনধারা একটা কথা আছে, আর ইহা সম্পূর্ণ সত্য।—ধীরে ধীরে নিজের মান বাড়িলে তবে জাতীয় মর্য্যাদা বাড়িতে পারে। মানের অর্থ উচ্ছৃঙ্খলতা নয়। ভয় অথবা আলস্যের বশে আপন