পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।
৩৫

গেল। আমার মনে হয়, এই পোষাক কাজ করিবার সময়ে খুব উপযোগী; সাদাসিধাও বটে, আর টিকেও বেশী দিন। এরূপ কাপড় সম্বন্ধে আমাদের উল্লেখযোগ্য কোনই অভিযোগ ছিল না। সব সময় এমনধারা পোষাক জুটিলেও কোন ক্ষতি নাই। শ্বেতাঙ্গদের পোষাক অন্যপ্রকার; তাহারা ‘বৈঠকদার’ টুপি পাইত, হাঁটু পর্যন্ত মোজা, ও দুইটি তোয়ালে, তা’ ছাড়া রুমালও তাহাদের দেওয়া হইত। ভারতবাসীদের জন্যও রুমাল দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলিয়া মনে হয়।

কাজ।

 যে সকল কয়েদী সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত, গবর্ণমেণ্ট তাহাদিগকে দিয়া দৈনিক নয় ঘণ্টা কাজ করাইয়া লইতে পারেন। কম্লেদীদের প্রত্যহ ৬টার সময়ে কুঠুরীতে বন্ধ করা হইত। সকালে ৫॥টায় উঠিবার ঘণ্টা বাজিত, আর ৬টায় কুঠুরীয় দরজা খুলিত। কুঠুরীতে বন্ধ করিবার ও বাহির করিবার সময় কয়েদী গোণ হইত। হাতে গোণার কাজ শীঘ্র ও ঠিক ভাবে হইয়া যায়, সেজন্য প্রত্যেক কয়েদীর উপর নিজ নিজ বিছানার পাশে সাবধানে দাঁড়াইয়া থাকিবার আদেশ ছিল। প্রত্যেককেই ৬টা বাজিবার আগে বিছানা গুটাইয়া হাতমুখ ধুইয়া তৈয়ায়ী থাকিতে হইত। সাতটার সময় কাজে হাজির হওয়ার কথা। কাজ ছিল নানারকমের। প্রথমদিন ত আমরা সদর রাস্তার উপর কতকটা খোলা জমি খুঁড়িবার কাজ পাইলাম। এই আমি বাগানের জন্য প্রস্তুত করা হইতেছিল; আমাদের প্রায় ত্রিশ জন ভারতবাসীকে এই কাজে লাগান হইল। কোন ব্যক্তি কাজ করিতে অসমর্থ হইলে তাহাকে আর কাজে যাইতে হইত না।