পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।
৩৯

করিতাম, ভগবান আমাদের সকল কাজের সাক্ষী। আমরা কাজ চুরী করিতেছিলাম, কারণ লোকদের কাজে ঢিল দেখা যাইতেছিল। আমার মতে, এরূপ ভাবে কাজে ফাঁকি দেওয়া আমাদের পক্ষে বড়ই কলঙ্কের কথা। আমাদের আন্দোলনে যে ঢিল পড়িতেছিল তাহার কারণ ইহাই। সত্যাগ্রহের পন্থা যেমন সরল তেমনি অরক্ষিত। আমাদিগকে সর্ব্বদা শুদ্ধ থাকিতে হইবে। গবর্নমেণ্টের সহিত ত আমাদের শত্রুতা নাই, তাহাকে আমি শত্রু বলিয়া মনে করি না। সরকারের সহিত বিবাদের কারণ —তাহার ত্রুটি সংশোধন করিয়া অন্যায় দূর করা। আমি তাহার অমঙ্গলে প্রসন্ন হইব না, তাহার বিপক্ষতাচরণ করিবার সময়েও তাহার মঙ্গল চাহিব। এই বিচারবুদ্ধিপ্রণোদিত হইয়া যথাশক্তি আমাদের জেলে কাজ করা উচিত। যদি আমি বলি যে আমাকে দিয়া কাজ করানো নীতি আমি মানি না, সুতরাং যখন দারোগা দেখিব তথনই শুধু পূরা কাজ করিব, নতুবা নয়, তবে এ ভাব মনে হওয়া অনুচিত। যদি কাজ উচিত ও ন্যায়ানুমোদিত না হয় তবে দারোগাকে গ্রাহ্য না করাই উচিত। তাহার বিরুদ্ধে দাঁড়ানই উচিত, এবং ইহার পরিণামে যদি দণ্ড বাড়িয়া যায় তবে তাহাও মাথা পাতিয়া লইব। কিন্তু কোন কোন ভারতবাসী একথা মানেন না। যে কাজ করে না সে শুধু কাজ এড়াইবার জন্যই এবং আলস্যবশতঃ কাজে ফাঁকি দেয়। এরূপ আলস্য ও কাজ চুরী আমাদের শোভা পায় না। সত্যাগ্রহী বলিয়া আমাকে যে কাজ দিবে তাহা আমার কন্যা উচিত। আর যদি দারোগর দিকে না চাহিয়া কাজ করা যায় তবে কোনও কষ্টই হয় না। তাই কাজে ফাঁকি দেওয়ার জন্যই অনেকের জেলে অনেক কষ্ট পাইতে হয়।

 এইবার আমি আসল কথার অবতারণা করিব। এইরূপে দিনের পর দিন কাজ সহজ হইয়া আসিল। যে দলে আমি ছিলাম, তখন তাহার উপর