পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
কারাকাহিনী।

উপার্জ্জনের, না খাওয়া দাওয়ার। সেখান অন্যে ঠিক সময়ে বাঁধিয়া দেয়; স্বয়ং সরকার বাহাদুর সেখানে শরীররক্ষী। আর তার জন্য ত আমাকে কিছুই দিতে হয় না। এমন কর্ম্মও জুটিতে পারে যে তাহাতে ব্যায়ামের কাজ বেশ হইয়া যায়। সকল ব্যসন সহজেই দূর হইয়া যায়, মন স্বাধীন থাকে, ঈশ্বরের আরাধনার সুযোগ আপনিই আসে। সেখানে ত’ শুধু শরীর বন্দী হইয়া থাকে, আত্মা পূর্ণতর স্বাধীনতা লাভ করে। প্রত্যহ নিয়মিত সময়ে শয্যা ত্যাগ করিতাম। শরীরকে যে বন্দী করিয়াছে, শরীর রক্ষার ভার তাহারই উপর। নানারূপে,স্বছন্দভাবেই দিন কাটে। যখন বিপদ আসিল বা দুষ্ট দারোগা যখন আমার প্রতি অত্যাচার করিতে আরম্ভ করিল, তখন ধৈর্য্য ধারণের অভ্যাস আমার হয়। তাহার বিরুদ্ধাচরণ আমার কর্তব্য; তাহাতেই আমার আনন্দ। এই ভাবে দেখিলে জেল পবিত্র ও সুখদায়ক মনে করা ও মত সেই ভাবে গড়িয়া তোলা নিজের হাতে। মনের অবস্থা বিচিত্র; অল্পেই সে ব্যথা পায়, অল্পেই তাহার আনন্দ। আমার আশা, আমার কারাবাসের এই দ্বিতীয় কাহিনী পড়িয়া পাঠক দেশ বা ধর্ম্মের জন্য জেলে যাওয়া, সেখানে দুঃখ ভোগ করা ও অন্যান্য বিপদ মাথা পাতিয়া লওয়া আপনার কর্তব্য মনে করিবেন। এই কথা মনে করিয়াই আমি আনন্দ পাই;