পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।
৬৭

এমনই সঙ্গীদের মধ্যে, এই ..বেস্থার ভিতরে, প্রিটোরিয়া জেলে আমার অভিজ্ঞতার আরম্ভ।

ভোজন।

 খাবার ব্যবস্থাও তেমনি। সকালে “পূপূ”, দ্বিপ্রহরে তিনদিন “পূপূ” ও আলু অথবা গাজর, তিনদিন “বীন্”; সন্ধ্যার সময়ে—ভাত (ঘি না দেওয়া)। বুধবার দ্বিপ্রহরে “বীন‍্স্”, ভাত, ঘি; ও রবিবারে “পূপূ” ভাত ও ঘি পাওয়া যাইত। বিনা ঘিয়ে ভাত খাওয়া কষ্টকর; তাই যতদিন ঘি পাই ততদিন ভাত খাইব না স্থির করিলাম। সকালে ও দ্বিপ্রহরে “পূপূ” মিলিত—কখনও কাঁচা, কখনও বা আখের রসের মত পাতলা। “বীন‍্স্” কখনও কখনও কাঁচা থাকিত, তবে প্রায়ই ঠিক পাইতাম। তরকারির বেলায় ছোট ছোট চারিটি আলু (সেগুলি আট আউন্স বলিয়া ধরা হইত।) ও গাজরের দিন তেমনই ছোট ছোট তিনটি গাজর।

 সকালে কোনও কোনও দিন ২।৪ চামচ “পূপূ” পাইতাম বটে, কিন্তু সাধারণতঃ দ্বিপ্রহরের খাওয়ার উপরই দুই মাস কাটাইরা দিলাম। এই উদাহরণ হইতে আমার বোকসরষ্ট জেলের ভ্রাতৃবৃন্দের বোঝা উচিত, নিজেরা রাঁধিবার সময়ে যদি কোনও জিনিষ কিছু কাঁচা থাকিত তখন ইহা লইয়া ব্রাগ করা উচিত হয় নাই। বলুন, এ অবস্থায় কাহার উপরে রাগ করিতে পারা যায়? এখানে একটা ব্যবস্থা করা যাইত বটে, তবে আমার মতে এবিষয়ে অভিযোগ করা আমাদের সাজে না। যেখানে সকলেই ধৈর্য্য ধারণ করিয়া থাকিতে পারে, সেখানে কেমন করিয়া অভিযোগ করা যায়? অভিযোগে সকলেই একমত হওয়া দরকার।