পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
কারাকাহিনী।

 কখন কখন দারোগাকে জানাইতাম, আলু কম হইয়াছে; তখন সে আরও আলু আনিয়া দিত। কি এমন করিয়া আর কতদিন চলে? একদিন দেখিলাম, দারোগা আমার জন্য অন্য একজনের বাটি হইতে আনিয়া দিতেছে। সেই দিন হইতে বলাই ছাড়িয়া দিলাম।

 সন্ধ্যার সময় ভাতে ঘি পাওয়া যাইত না ইহা আমি লক্ষ্য করিয়াছিলাম, এবং যাহাতে এ বিষয়ে কোনও একটা ব্যবস্থা হয়, তাহা করিব স্থির করিয়াছিলাম। বড় দারোগাকে বলিলে সে উত্তর দিল,—ঘি কেবল বুধ ও রবিবার দিন দ্বিপ্রহরে মাংসের বদলে পাওয়া যাইতে পারে, যদি বেশী দরকার হয় তবে ডাক্তারের কাছে যাইতে হইবে। পরদিন ডাক্তারের সহিত দেখা করিতে চাহিলাম—দেখা হইল।

 ডাক্তারকে বলিলাম,—চর্ব্বির বদলে ভারতীয় কয়েদীদের জন্য যেন ঘি দেওয়া হয়।

 সেখানে বড় দারোগা ও ছিল, সে বলিল,—গান্ধীর প্রার্থনা অন্যায়। এতদিন ত’ কত ভারতীয় কয়েদী চর্ব্বিও খাইয়াছে, মাংসও খাইয়াছে। চর্ব্বি নিলে শুকনা চাল দেওয়া হয়, তাহাও লোকে বেশ খায়। সত্যাগ্রহ কয়েদীরাও ত সকলেই খায়। জেলে আসার সময় তাহাদের ওজন নেওয়া হইয়াছিল, যাওয়ার সময় আবার ওজন করিয়া দেখা গেল, ওজন বাড়িয়াই গেছে।

 ডাক্তার বলিলেন,—এর উপর আর কি বলিতে পার? উত্তর দিলাম —এ ঘটনা জানি না, তবে নিজের বিষয় বলতে পারি যে যদি একেবারেই ঘি না পাই, তবে নিশ্চয়ই আমার শরীর খারাপ হইবে। ডাক্তার বলিলেন,—তোমার জন্য তবে রুটির হুকুম দিতেছি; উত্তর দিলাম, এর জন্য ধন্যবাদ, কিন্তু আমি শুধু আমারই জন্য বলিতে আসি নাই,—যতক্ষণ