পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
কারাকাহিনী।

মুখ মোছার জন্য রুমাল পাইলাম। প্রত্যেক ভারতবাসীরই যে এ গুলির প্রয়োজন, আমি সে কথাও বলিয়াছিলাম। সত্য কথা বলতে গেলে স্বীকার করিতেই হইবে যে গোরাদের চেয়ে ভারতবাসী শোওয়া বসা বিষয়ে বিলাসী। বিনা বালিশে শোওয়া ভারতবাসীর পক্ষে বড় কঠিন।

 এই ভাবে খাওয়ার ও খোলা হওয়ায় কাজ করার সুবিধার সঙ্গে সঙ্গে শুইবার সুবিধাও হইয়া গেল। কিন্তু কপাল যায় সঙ্গে; চৌকী জুটিল, কিন্তু তাহা আবার ছারপোকায় ভরা। প্রায় ১০ দিন চৌকী ব্যবহার করিলাম না, তাহার পর বড় দারোগা যখন ঠিক করিয়া দিল, তখন তাহাতে শুইতে আরম্ভ করিলাম। কিন্তু এতদিনে আমার মেঝেতে কম্বল পাতিয়া শোওয়ার অভ্যাস হইয়া গিয়াছিল, সুতরাং চৌকী পাইয়া বিশেষ কিছু সুবিধা অসুবিধা আর হইল না। আমি বালিশের কাজ বইগুলি দিয়া চালাইতেছিলাম, সুতরাং বালিশ পাইলেও বিশেষত্ব কিছু বোধ করিলাম না।

হাতকড়ী পরিতে হইল।

 প্রথম হইতেই আমার সঙ্গে যে ব্যবহার করা হইয়াছিল তাহার সম্বন্ধে আমার মনে যে ধারণা হইয়াছিল, তাহা নিম্নলিখিত ঘটনায় আরও বদ্ধমূল হইল। চার পাঁচ দিন পরে মিসেস্ পিলের, মোকদ্দমায় সাক্ষ্য দিবার জন্য আমার উপর সমন দেওয়া হইল। আমাকে আদালতে লইয়া যাওয়া হইল। সেই সময়ে আমার হাতে হাতকড়ী দেওয়া হয়। দারোগা কৃপা করিয়া একটু জোরেই দিয়াছিলেন, হয়ত বা অজ্ঞাতসারে এরূপ ঘটিয়া থাকিবে। বড় দারোগা দেখিতে আসিয়াছিলেন, তাঁহার কাছে অনুমতি চাহিলাম, একখানা বই সঙ্গে লইয়া যাইব; সে ভাবিল, হাতকড়ী পরিতে লজ্জা, তাই এই প্রার্থনা। সে বলিল,—“বইখানা এমন ভাবে দুই হাতে লও যাহাতে