পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৫
কারাকাহিনী।

হাতকড়ী, ঢাকা পড়ে।” হাসি অসিল; হাতকড়ী পরাটা ত আমি সৌভাগ্য বলিয়া মনে করি। এমন পুস্তক হাতে পড়িল, যাহার অর্থ— ঈশ্বরের রাজ্য তোমার হৃদয়েই রহিয়াছে—“The Kingdom of God is within you” Tolstoi. মনে মনে বললাম, ভাল সুযোগ পাওয়া গেল। বাহির হইতে যত বিপদই আসুক, ঈশ্বরের স্থান যদি আমার হৃদয়ে থাকে, তবে আর ভয় কি?

 এইভাবে আমায় আদালতে পায়ে হাঁটিয়া যাইতে হইল। ফিরিবার সময়ে জেলের ঠেলাগাড়ীতে আসিয়াছিলাম। ভারতবাসীরা বোধ হয় এ কথা জানিতে পারিয়াছিল যে, আমি ঐ পথ দিয়া যাইব। তাই আদালতের সম্মুখে অনেক ভারতবাসী আসিয়াছিলেন। তাহাদের মধ্যে মিঃ এ্যম্বকলাল ব্যাস, মিসেস পিলের টকিলের সাহায্যে আমার সহিত দেখা করিলেন। আমাকে আর একবার আদালতে যাইত হইয়াছিন সেবারও হাতকড়ী দেওয়া হয়, তবে যাওয়া আসা ঠেলাগাড়ীতে করিয়াছিলাম।

সত্যাগ্রহের মহিমা

 উপরে এমন অনেক কথা লিখিয়াছি যাহা হয়ত খুবই নগণ্য, উল্লেখযোগ্য নহে, কিন্তু সেগুলি বিস্তারিত ভাবে বলিয়াছি শুধু ইহাই দেখাইবার জন্য সত্যাগ্রহ ছোট বড় সকল ঘটনাতেই প্রয়োগ করা যাইতে পারে। ছোট দারোগা আমাকে যে শারীরিক কষ্ট দিল তাহা আমি স্বীকার করিয়া নিয়াছিলাম, ফলে আমার মন শান্ত হইল। শুধু তাহাই নহে, শেষে তাহাদেরি আপনা হইতে এ অন্যায় দুর করিতে হইল। আমি যদি সেগুলির প্রতিরোধ করিতে চেষ্টা করিতাম তবে শুধু আমার মন দুৰ্বল হইয়া পড়িত, এবং যে বড় কাজ আমি করিতেছিলাম তাহা অসম্পূর্ণ ই থাকিয়া