পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
কারাকাহিনী।

অনেক অংশ আমি কণ্ঠস্থ করিয়াছিলাম। রাত্রে যতক্ষণ না ঘুম শাসিত ততক্ষণ সেগুলি আবৃত্তি করিতাম, ও প্রত্যহ সকালে আধঘণ্টা সেই বিষয়ে চিন্তা করিতাম। তাহাতে মন সর্ব্বদাই প্রফুল্ল থাকিত। যখন কোনও নিরাশার ভাব মনে মনে জাগিত, তখন সেগুলি মনে করা মাত্র হৃদয় শান্ত হইত, ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতায় মন পূর্ণ হইয়া উঠিত। এ বিষয়ে নানা কথাই পাঠককে বলিবার মত, তবু তাহার উল্লেখ এখানে অপ্রাসঙ্গিক হইবে বলিয়া ক্ষান্ত হইলাম। শুধু ইহাই বলিতে চাহি, যে, সৎগ্রন্থ অনেক সময় সৎসঙ্গের অভাব কিয়দংশে পূর্ণ করতে পারে; সুতরাং যে সকল ভারতীয় কয়েদী জেলেও আনন্দ লাভ করিতে চাহেন তাঁহাদের সৎগ্রন্থ পাঠের অভ্যাস রাখা উচিত।

তামিল শিক্ষা।

 এই'সত্যাগ্রহসংগ্রামে তামিল ভ্রাতৃবৃন্দ যত কাজ করিতেছিলেন, অন্য ভারতবাসী তত করিতে পারেন নাই। তাই মনে হইল, অন্য কোনও কারণ না থাকলেও শুধু মুক্ত হৃদয়ে তাহাদের উপকার স্বীকার করিবার জন্যই আমার ভাল করিয়া তামিল পড়া উচিত। সুতরাং শেষের একমাস বিশেষ করিয়া তামিল পড়িবার জন্য কাটাইলাম। তামিল যতই পড়িতে লাগিলাম, ততই ভাষাটি খুব ভাল লাগিতে লাগিল। ভাষাটি যেমন সরস, তেমনি মধুর। তামিল রচনাবলী পড়িয়া মনে হইল, অতীতে এবং, বর্তমানেও এই ভাষাভাষী লোক খুব বিচারবান্, বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী বলিয়া পরিচয় দিয়াছেন।

 ভারতকে যদি এক করিতে হয়, তবে মান্দ্রাজের বাহিরে, অনেক ভারতবাসীরই তামিল শেখা উচিত।