পাতা:মহানপুরুষদের সান্নিধ্যে - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগর
চতুর্থতঃ, বিদ্যাসাগর মহাশয় কলেজের উচ্চতর শ্রেণীতে ইংরেজী শিক্ষাদানের প্ৰেবৰ্ত্তন করিয়াছেন ।
এই সমস্ত পরিবর্ত্তন সাধন ও আলোড়নের মধ্যে ভর্ত্তি হইলাম। সমালোচনা ও বাগবিতণ্ডার ধূলিঝঞ্ঝা তখন নিম্নতর ক্লাসগুলিতেও মাঝে মাঝে ছড়াইয়া পড়িত। ইহা ছাড়া, বিধবাবিবাহের বিরোধী দলের বিক্ষোভ তখন বাংলার সমাজে এবং বিশেষ করিয়া সংস্কৃত কলেজে চাঞ্চল্যের তরঙ্গ তুলিয়াছিল। বিদ্যাসাগর ইহার সমর্থনে পুস্তকাদি লিখিয়াছিলেন এবং প্ৰধানতঃ তাহার ফলেই সরকার কর্তৃক বিধবা বিবাহ আইনসিদ্ধ বলিয়া ঘোষিত হয়। এই সময়ে সমগ্ৰ শিক্ষিত সমাজ এবং বিশেষ করিয়া সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতগণ সংস্কারকামী এবং ইহার বিরোধী - ক্রমে ক্রমে এই দুইটি বিবদমান দলে বিভক্ত হইয়া পড়িয়াছিলেন ।
তখনকার দিনে সংস্কৃত কলেজই ছিল এই দ্বন্দ্ব সংঘর্ষের প্ৰধান ক্ষেত্ৰ - আর আমরা নূতন ছাত্রের দল ও মাঝে মাঝে বিদ্যাসাগরের পক্ষ ও বিপক্ষের সমর্থনে এই কলহে জড়িত না হইয়া পারিতাম না। । আমি তো প্ৰথম হইতেই পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্রের সমর্থক হিসাবে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করিয়া লই। হয়তো ইহার একটি প্ৰধান কারণ - বিদ্যাসাগর মহাশয় আমার মাতুল দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ মহাশয়ের সহপাঠী । তাছাড়া, তিনি আমার পিতা শ্ৰীযুক্ত হরানন্দ বিদ্যাসাগর মহাশয়েরও সতীর্থ এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন ।