পাতা:মহানপুরুষদের সান্নিধ্যে - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগর
সকলের সঙ্গে আমিও বিবাহের অনুষ্ঠান দেখিতে গেলাম । বিবাহ বাসরের দ্বারদেশে এক বিরাট শোভাযাত্রীদল আসিয়া পৌঁছিয়াছে। ইহার পুরোভাগে বিদ্যাসাগর মহাশয় তঁহার বন্ধুবান্ধব এবং বিবাহের বরসহ বিরাজমান। অগণিত উৎসাহী দর্শকের ভীড়ে রাস্তায় তিল ধারণের স্থান নাই । তখনকার দিনে রাস্তার দুই পাশে গভীর নৰ্দমার খাদ দেখা যাইত । সেই রাত্ৰিতে কৌতুহলী জনতার চাপে তাহার মধ্যেও অনেককে পতিত হইতে দেখা গিয়াছিল ।
অনুষ্ঠান শেষে এই ঘটনাকে কেন্দ্ৰ করিয়া কলিকাতায় এক উত্তেজনাপূর্ণ বিতর্ক চলিতে লাগিল । রাস্তাঘাট, পার্ক, বাজার, বৈঠকখানা সর্ব্বত্র নরনারীর মুখে একই বিষয়ের অবতারণ। শান্তিপুরের তন্তুবায়গণ তো এক প্রকার শাড়ীই তৈয়ার করিয়া ফেলিল - যাহার পাড়ের মধ্যে বিদ্যাসাগরের দীর্ঘজীবন কামনাযুক্ত গানের কলি অঙ্কিত। সে সময়কার উদ্দীপনামায় সংস্কার যুগে এই জাতীয় গান প্ৰায়ই শুনা যাইত । এইরূপে এমন এক প্ৰাণবন্ত আন্দোলনের সৃষ্টি সে সময়ে হয় যাহা আমাদের দেশে কখনও দৃষ্টিগোচর হয় নাই ।

শ্ৰীযুক্ত রাজকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের গৃহে প্ৰথম বিধবা বিবাহনুষ্ঠান হইবার অল্প কাল পরেই ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগরের সহিত তৎকালীন জনশিক্ষা বিভাগের অধিকৰ্ত্তা মিঃ গর্ডন ইয়ং-এর মনোমালিন্য ঘটে ।