পাতা:মহানপুরুষদের সান্নিধ্যে - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহান পুরুষদের সান্নিধ্যে একদিন ভক্তমণ্ডলী পরিবৃত হইয়া তিনি বসিয়া আছেন । কথাপ্রসঙ্গে মালা জপের প্রসঙ্গ উঠিল। একটি ভক্ত পরমহংসকে প্রশ্ন করিলেন-আচ্ছা দেব দেবার নাম স্মরণের জন্য মালা জপের কি সত্যিই কোন সার্থকতা আছে ? রামকৃষ্ণ আত্মপ্রত্যয়ের সুরে বলিলেন - হঁ্যাগো, যদি তার পেছনে আন্তরিক ব্যাকুলত থাকে। কিন্তু, আন্তরিকতাহীন নাম জপে কোন ফলোদয়ই হয় না । যেমন ধর, টিয়া পাখীর হরির নাম করা। পোষা পাখীকে রাধা-কৃষ্ণ বুলি শেখাও, সে পড়তে শিখবে এবং কারণে অকারণে সেই শিখানো বুলি পড়ে শ্রোতাদের চমৎকৃত করবে। কিন্তু যদি কোন দিন তাকে বেড়ালে আক্রমণ করে, তখন কিন্তু তার মুখ দিয়ে আর রাধাকৃষ্ণ বুলি বার হবে না। সে তখন প্ৰাণ ভয়ে মাতৃভাষায় “কঁ্যা” “কঁ্যা’ শব্দই করতে থাকবে। তার কারণ, রাধাকৃষ্ণ তার শেখা বুলি, অস্তরের কথা নয়, সেজন্যই সঙ্কটকালে সে-বুলি ভুলে যায়। তিনি বলিয়া চলিলেন—অন্তরিকতা ও ব্যাকুলতাহান ধৰ্ম্মাচরণকারীদের অবস্থা টিয়াপাখীর মতষ্ট হয়ে থাকে । ধৰ্ম্মানুষ্ঠান তাদের জীবনের বহিরঙ্গ ব্যাপার, তাই সঙ্কটমুতুৰ্ত্তে তারা টিয়াপাখীর মতই এটা বিস্মৃত হয়ে যায়- ফলে ধৰ্ম্মের মুখোস খুলে স্বরূপ প্ৰকাশ পায় । বিশ্বাস বা ভক্তির জোর না থাকলে ধৰ্ম্মের ভাব অল্প আঘাতেই ছুটে যায়। যে বিশ্বাস জীবনের সঙ্কটকালে টিকে থাকতে পারে না সে আবার বিশ্বাস নাকি ? এরূপ ধরণের কথা বহুবারই শুনিয়াছি। f তত্ত্বদশী ১৬২