পাতা:মহাভারতীয় বৃহৎ ভীষ্মপর্ব্ব - কাশীরাম দাস.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
বৃহৎ।

বাণ কাটি অর্জ্জুন করেন খান খান। ভীষ্মের উপরে পুনঃ পূরেন সন্ধান॥ এইরূপে দুই জন নিবারয়ে বাণ। মহাক্রুদ্ধ হইলেন গঙ্গার সন্তান॥ পর্ব্বত নামেতে অস্ত্র ভীষ্ম নিল করে। লক্ষ২ গিরিবর যাহাতে সঞ্চরে॥ মন্ত্রে অভিষেকি এড়ে গঙ্গার নন্দন। দেখি সব দেবগণ হৈল ভীত মন॥ লক্ষ লক্ষ পর্ব্বতেতে আবরে আকাশ। শূন্যপথ রুদ্ধ হৈল না চলে বাতাস॥ ভাদ্রমাসে নিশা যেন ঘোর অন্ধকার। দেখি সব সৈন্যগণে করে হাহাকার॥ সাগর মন্থনে যেন মহা কোলাহল। মহাশব্দ করি আইলে যত কুলাচল॥ পাণ্ডবের সৈন্য সব ভয়ে পলাইল। শূন্য পথে দেবগণ ত্রাসিত হইল॥ সর্ব্ব সৈন্য পলাইল সহ নৃপবর। তিন মহারথী রহে সংগ্রাম ভিতর॥ বৃকোদর ধনঞ্জয় অভিমন্যু বীর। এই তিন মহারথী রণে থাকে স্থির॥ দেখি যত দেবগণ করে হাহাকার। গাণ্ডীবে টঙ্কার দেন ইন্দ্রের কুমার॥ হুহুঙ্কার ছাড়িয়া ছাড়েন বজ্রবাণ। যতেক পর্ব্বত ভাঙ্গে বজ্রের সমান॥ রেণুর প্রমাণ করি সব উড়াইল। দেখি সব দেবগণ সানন্দ হইল॥ যতেক দেবতা করে পুষ্প বরিষণ। সমরেতে আইল সমস্ত যোদ্ধাগণ॥ সাধু২ বলি ভীষ্ম প্রশংসা করিল। সন্ধান পূরিয়া পুনঃ দিব্যাস্ত্র মারিল॥ বাণে নিবারেন তাহা পার্থ ধনুর্দ্ধর। কেহ পরাজয় নহে বিক্রমে সোসর॥ চক্ষু পালটিতে দোঁহে না পান বিশ্রাম। দেবাসুর চমকিত দেখিয়া সংগ্রাম॥ দৈবে দেখিলেন পার্থ কৃষ্ণের শরীর। সমরে প্রতিজ্ঞা নিজ রাখে কুরুবীর॥ সংহারি অযুত রথি শঙ্খ বাজাইল। দেখিয়া পার্থের মনে বিস্ময় জন্মিল॥ সন্ধ্যা জানি সর্ব্ব জন নিবর্ত্তিল রণে। দুই দলে চলি গেল নিজ নিকেতনে॥ মহা ভারতের কথা অমৃত লহরী। কাশী কহে শুনিলে তরিবে ভব বারি॥

অথ কর্ণ ও দুর্য্যোধন ও ভীষ্মের মন্ত্রণা।

 ত্রিপদী। দুর্য্যোধন মহাবীর, দেখিয়া না হয় স্থির, বিস্তর পড়িল সৈন্যগণ। মনে যুক্তি বিচারিয়া, শকুনিরে পাঠাইয়া,