পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
মহাভারত।

নয়নগেচির করিয়া মদনবাণে আহত হইলেন, এবং নিজ মনোরথ স্বীয় প্রিয়বয়স্য প্রাৱা আত্মপিতার গোচর করিলেন। তদনুসারে প্রমতি স্থূলকেশসন্নিধানে উপস্থিত হইয়া আপন পুত্রার্থে সেই কন্যা প্রার্থনা করিলেন। স্থূলকেশ ফনী নক্ষত্রে বিবাহের দিন স্থির করিয়া রুরুকে প্রমদ্বরা প্রদান করিলেন।

 বিবাহের কিছু পূর্বে, এক দিন প্রমরা সখীগণ সমভিব্যাহারে ক্রীড়া করিতেছিল। তাহার ক্রীড়া স্থানে এক সর্প সুপ্ত পতিত ছিল। আসন্নমরণা প্রমরা অজ্ঞাতসারে সেই সর্পের উপর পদার্পণ করিল, এবং সর্প কুপিত হইয়া বিষাক্ত দশন দ্বারা দংশন করিবামাত্র, বিশ্রী, বিবর্ণা, বিচেতনা ও মুক্তকেশা হইয়া ভূতলে পতিতা হইল। তদ্দর্শনে তদীয় বন্ধুগণ নিরানন্দসাগরে নিমগ্ন হইলেন। কিন্তু সে গতজীবন ও হতশ্রী হইয়াও পুনর্বার রমণীয়দর্শনা হইয়া সুপ্তার ন্যায় শোভ। পাইতে লাগিল। ফলতঃ, প্রমদরা পূর্বাপেক্ষা অধিকতর মনোহর হইল।

 এই রূপে ভূহলপতিতা গত প্রাণী প্রমরাকে সেই অবস্থায় তাহার পিতা ও অন্যান্য তপস্বিগণ অবলোকন করিতে লাগিলেন। অনশুর স্বস্ত্যত্রেয়, মহাক্কানু, কুশিক, শঙ্খমেখল, উদ্দালক, কঠ, শ্বেত, ভরদ্বাজ, কৌণকুৎস্য, আষ্টিষেণ, গৌতম ও পুত্রসহিত প্রমতি এবং অন্যান্য বনবাসী পষিগণ অনুকম্পাপরবশ হইয়া অধ্যায় সমাগমন করিলেন। তাঁহারা সকলেই সেই সর্বাঙ্গসুন্দরী কন্যাকে তুজঙ্গবিষ প্রভাবে কাল গ্রাসপতিতা দেখিয়া বিলাপ ও পরিতাপ করিতে লাগিলেন। রুরু তদ্দর্শনে যৎপয়োনাস্তি কাতর হইয়া তথা হইতে প্রস্থান করিলেন।