পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৬
মহাভারত।

সমস্ততঃ পতিত হইতে লাগিল। অসুরগণ খড়গ চক্র শক্তি গদ প্রভৃতি শাঘাতে ছিন্ন ভিন্ন হইয়া শশাণিত বমন করিতে করিতে ভূতুলশায়ী হইল। তাহাদিগের তপ্তকাঞ্চনশোভিত মস্তক সকল অতি দারুণ পট্টিশপ্রহারে কলেবর হইতে পৃথভূত হইয়া অনবরত ধরাতলে পতিত হইতে লাগিল। সমরনিহত মহাসুরগণ রুধিরলিপ্তকলেবর হইয়া ধাতুরাগরঞ্জিত গিরিশিখরের ন্যায় ভূশয্যায় শয়ন করিল। পরস্পর শস্ত্র প্রহার দ্বারা রণক্ষেত্রে হাহ রব উথিত হইল। দূর হইতে লৌহময় তীক্ষ্ণ পরিঘের আঘাত ও সন্নির্ষে মুষ্টি প্রহার ইত্যাদি প্রকারে রণপ্রবৃত্ত দেবদানবদলের কোলাহল নভোমণ্ডল ব্যাপ্ত করিল। চারি দিকে কেবল ছিন্ধি, ভিন্ধি, ঘাতয়, পাতয় ইত্যাদি ঘোতর শব্দ শ্রত হইতে লাগিল।

 এই রূপে মহাভয়দায়ী তুমুল সংগ্রাম আরম্ভ হইলে, নর ও নারায়ণ যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত হইলেন। ভগবান্ নারায়ণ, নরদেবের দিব্য ধনু অবলোকন করিয়া, দানবকুলবিলয়কারী স্বীয় চক্র স্মরণ করিলেন। সেই অরাতিনিপাতন, সূর্য্যসমপ্রভ, অপ্রতিহত প্রভাব, ভীষণমূর্ত্তি সুদর্শন চক্র স্মৃতমাত্র অন্তরীক্ষ হইতে অবতীর্ণ হইল। করিক দীর্ঘবাহু ভগবা, প্রজ্বলিতহুতাশনসম, পরপুরাবদারণ, মহাপ্রভ, চক্র বিপক্ষদলে প্রক্ষেপ করিলেন। ভগবৎপ্রেরিত চক্র মহাবেগে গমন করিয়া সহস্র সহস্র দৈত্য দানব সংহার করিল; কোনও স্থলে অতি প্রদীপ্ত দহনের ন্যায় প্রজ্জ্বলিত হইয়া অসুরদল নিপাত করিল; কোনও স্থলে ভূতলে ও নভোমণ্ডলে বিচরণ পূর্ব্বক পিশাচের ন্যায় তাহাদের শোণিত পনি করিতে লাগিল।

 নবজলধরকলেবর মহাবল পরাক্রান্ত অসুরেরাও গিরি নিক্ষেপ