পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অষ্টাবিংশ অধ্যায়— আস্তীকপর্ব্ব।

উগ্রশ্রবাঃ কহিলেন, গরুড় সর্পগণ কর্ত্তৃক এইরূপ অভিহিত হইয়া মাতৃসমীপে আসিয়া কহিলেন, জননি! আমি অমৃত আহরণে যাইছে, পথে কি আহার করিব, বলিয়া দাও। বিনতা কহিলেন, সমুদ্রমধ্যে বহু সহস্র নিষাদ[১] বাস করে, তাহাদিগকে ভক্ষণ করিয়া অমৃত আহরণ কর। কিন্তু কোনও ক্রমেই তোমার যেন ব্রাহ্মণবধে বুদ্ধি না জন্মে; . ব্রাহ্মণ সব ভূতের অবধ্য ও অনলতুল্য। ব্রাহ্মণের কোপ জন্মাইলে তিনি অগ্নি, সূর্য, বিষ ও শস্ত্রস্বরূপ হন। ব্রাহ্মণ শাস্ত্রে সর্বভূতের গুরুরূপ পরিকীর্তিত হইয়াছেন। ইত্যাদি কারণে ব্রাহ্মণ সাধুদিগের পরম পূজনীয়। অতএব বৎস! তুমি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইলেও কোনও ক্রমে কদাপি ব্রাহ্মণের বধ বা বিদ্রোহাচরণ করিবে না। সংশিতব্রত[২] ব্রাহ্মণ ক্রুদ্ধ হইলে যেরূপ ভস্ম করিতে পারেন, কি অগ্নি, কি সূর্য, কেহই সেরূপ পারেন না। বক্ষ্যমাণ বিবিধলক্ষণাক্রান্ত ব্যক্তিকে ব্রাহ্মণ বলিয়া জানিবে। ব্রাহ্মণ সকল জীবের অগ্রজ, সকল বর্ণের শ্রেষ্ঠ, সকল লোকের পিতা ও গুরু।


  1. ধীবর, যাহারা মৎস্য ধরিয়া বিক্রয় করিয়া জীবিকা নির্বাহ করে।
  2. যে ব্যক্তি যথানিয়মে নিত্য নৈমিত্তিক প্রায়শ্চিত্ত উপাসনাদি ধর্ম্মের অনুষ্ঠান করে।