পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৪
মহাভারত।

 গরুড় মাতৃমুখে ব্রাহ্মণের এইরূপ মহিমা ও প্রভাব শ্রবণ করিয়া জিজ্ঞাসিলেন, মাতঃ। ব্রাহ্মণের কি প্রকার আকার, কীদৃশ শীল ও কিরূপ পরাক্রম, তিনি কি অগ্নির স্থায় প্রদীপ্তকলেবর অথবা সৌম্যমূর্ত্তি? আমি যে সমস্ত শুভ লক্ষণ দ্বারা ব্রাহ্মণকে চিনিতে পারি, তৎসমুদায় তুমি হেতুনির্দেশ পূর্বক বৃর্ণন কর'। বিনতা কহিলেন, বৎস! যিনি তোমার কণ্ঠপ্রবিষ্ট হইয়া বড়িশ প্রায় ক্লেশকর হইবেন ও জুলন্ত অঙ্গারের ন্যায় কণ্ঠদাহ করিবেন, তাঁহাকে সুব্রাহ্মণ জানিৰে। তুমি ক্রুদ্ধ হইয়াও কদাপি ব্রাহ্মণবধ করিবে না। বিনতা পুত্রবাৎসল্য প্রযুক্ত পুনর্ব্বার কহিলেন, যিনি তোমার জঠরে জীর্ণ হইবেন না, তাঁহাকে সুব্রাহ্মণ জানিবে। সর্পমায়া প্রতারিত। পরম দুঃখিতা পুত্রবৎসলা বিনতা পুত্রের অতুল বীর্য জানিয়াও প্রীত মনে এই আশীর্বাদ করিতে লাগিলেন, বায়ু তোমার পক্ষদ্বয় রক্ষা করুন, চন্দ্র ও সূর্য পৃষ্ঠদেশ, অগ্নি মস্তক, ও বসুগণ সর্ব শরীর রক্ষা করুন। আর আমিও সংশতা ও অতপরায়ণ হইয়া এই স্থানে, তোমার মঙ্গলচিন্তনে তৎপরা রহিলাম। এক্ষণে অভিপ্রেত কার্য্য সিদ্ধি নিমিত্ত নির্বিঘ্নে প্রস্থান কর।

 এইরূপ মাতৃবাক্য শ্রবণানন্তর বিহগরাজ পক্ষ বিস্তার পূর্ব্বক নভোমণ্ডলে আরোহণ করিলেন। তিনি কিয়ৎ ক্ষণ পরে বুভুক্ষিত হইয়া দ্বিতীয়কৃতান্তপ্রায় নিষাদগণের বাসস্থানে অবতীর্ণ হইলেন। তাঁহার অবতরণবেগ দ্বারা এরূপ ধূলিপ্রবাহ উত্থিত হইল যে, নিষাদেরা অন্ধ ও নভোমণ্ডল আচ্ছন্ন হইল, সমুদ্রের জল শুষ্ক হইতে লাগিল, আর পক্ষপবনবেগে সমীপৰী বৃক্ষ সকল বিচলিত হইল। তৎপরে বিহগরাজ নিষাদদিগের পথ রুদ্ধ করিয়া - অতি প্রকাণ্ড মুখ বিস্তার