পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৮
মহাভারত।

তুমিও কচ্ছপযযানি প্রাপ্ত হইবে। বুদ্ধিভ্রষ্ট সুপ্রতীক ও বিভাবসু এই রূপে পরস্পরদত্ত শাপ প্রভাবে গজত্ব ও কচ্ছপ প্রাপ্ত হইয়াছে। এক্ষণে তাহারা পশুযযানি প্রাপ্ত হইয়াও রোষদোষ বশতঃ পরস্পর দ্বেষরত এবং শরীরগুরুতা ও বলদৰ্পে দর্পিত হইয়, পূর্ব্ববৈরানুসরণ পূর্ব্বক, এই সবোবরে বস্থিতি করিতেছে। তীরস্থিত গজের শব্দ শুনিতে পাইয়া জলমধ্যবাসী কচ্ছপ সমস্ত সরোবর আলোড়িত করিয়া উখিত হইয়াছে, এবং মহাবীর্য গজও কচ্ছপকে উত্থিত দেখিয়া ও কুণ্ডলীকৃত করিয়া জলে অবতীর্ণ হইয়াছে; তদীয় দন্ত, শুণ্ড, লাঙ্গল ও পদচতুষ্টয়ের বেগে সবোবর বিচলিত হইয়াছে, কচ্ছপও মস্তক উদ্যত করিয়া যুদ্ধার্থে সম্মুখীন হইয়াছে। গজের আকার ছয় যোজন উন্নত ও দ্বাদশ যোজন বিস্তৃত; কচ্ছপ তিন যোজন উন্নত, তাহার শরীরের মণ্ডল দশযোজনপ্রমাণ। উহারা পরস্পর প্রাণবধে কৃতসংকল্প হইয়া যুদ্ধোন্মত্ত হইয়াছে; তাহাদিগকে ভক্ষণ করিয়া কার্য সাধন কর।

 কশ্যপ গরুড়কে ইহা কহিয়া এই আশীর্ব্বাদ করিতে লাগিলেন, দেবতাদিগের সহিত যুদ্ধকালে তোমার মঙ্গল হউক; আর পূর্ণকুশু, গো, ব্রাহ্মণ ও আর যে কিছু মঙ্গলকর বস্তু আছে, সে সমস্ত তোমার শুভদায়ক হউক। হে মহাবল পরাক্রান্ত! যৎকালে তুমি দেবতাদিগের সহিত সংগ্রামে প্রবৃত্ত হইবে, তখন ঋক, যজুঃ, সাম, এই ত্রিবিধ বেদ, পবিত্র যজ্ঞীয় হবিঃ, সমস্ত রহস্যশাস্ত্র ও সমস্ত বেদ, তোমার বলাধান করিবেন। গরুড় পিতার আশীর্বাদ শ্রবণ করিয়া তৎক্ষণাৎ তথা হইতে প্রস্থান করিলেন, এবং অনতিদূরে সেই নির্মল সলিলপূর্ণ পক্ষিকুলসমাকুল হ্রদ দেখিতে পাইলেন। অনন্তর