পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ত্রিংশ অধ্যায়— আস্তীকপর্ব্ব।

উগ্রশ্রবাঃ কহিলেন, মহাবল বিহগরাজের পদস্পর্শমাত্র সেই তরুশাখা ভগ্ন হইল। ভগ্ন হইবামাত্র তিনি উহাকে ধারণ করিলেন, এবং শাখা ভগ্ন করিয়া বিস্ময়াবিষ্ট চিত্তে ইতস্ততঃ দৃষ্টিনিক্ষেপ করত, অধোমুখে লম্বমান তপঃপরায়ণ বালখিল্য ব্রহ্মর্ষিদিগকে দেখিতে পাইলেন। দেখিয়া এই চিন্তা করিতে লাগিলেন, ঋষিগণ এই শাখায় লম্বান আছেন, শাখা ভূতলে পতিত হইবামাত্র ইহাদিগের প্রাণবিনাশ হইবে। অনন্তর, গজ ও কচ্ছপকে নখর দ্বারা দৃঢ়তর রূপে ধারণ করিয়া ঋষিদিগের প্রাণবিনাশ আশঙ্কাতে চঞ্চপুট দ্বারা সেই শাখা গ্রহণ করিলেন। মহর্ষিগণ, গরুড়ের এইরূপ অতিদৈব[১] কর্ম্ম দেখিয়া, বিস্ময়াবিষ্ট চিত্তে হেতুবিন্যাস পূর্ব্বক তাঁহার এই নাম রাখিলেন যে, যেহেতু এই বিহঙ্গম গুরু ভার গ্রহণ পূর্বক উডৰ্ডীন হইয়াছে, এজন্য অদ্যাবধি ইহার নাম গরুড়[২] রহিল। অনন্তর তিনি পক্ষপবনবেগে পার্শ্ববর্তী পর্ব্বত সকল বিচলিত করিয়া প্রস্থান করিলেন।

এই রূপে পতগরাজ বালখিল্য ব্রহ্মর্ষিগণের প্রাণরক্ষার্থে গজ ও কচ্ছপ লইয়া নানা দেশে ভ্রমণ করিলেন। পরিশেষে,

  1. দেবতাদিগেরও অসাধ্য।
  2. গুরু শব্দের অর্থ মহৎ ও ভী ধাতুর অর্থ উড়িয়া যাওয়া। এই উভয়েব যোগে গরুড় পদ সিদ্ধ হইয়াছে।