পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
মহাভারত।

সত্বর গমনে প্রস্থান করিলেন। ঋষিগণ এই রূপে যৎপরোনাস্তি অবমানিত হইয়া সাতিশয় রোষাবিষ্ট হইলেন, এবং যাহাতে ইন্দ্রের ভয় জন্মে, এরূপ এক মহৎ কর্ম্মের অনুষ্ঠান করিলেন। তাঁহারা এই কামনা করিয়া মহার্থ মন্ত্র প্রয়োগ পূর্বক যথাবিধি হুতাশনমুখে আহুতি প্রদান করিতে লাগিলেন যে, কামবীর্য্য, কামগম, দেবরাজভয়প্রদ অন্য এক ইন্দ্র উৎপন্ন হউক, অদ্য আমাদিগের তপস্যাফলে ইন্দ্রের শতগুণ শৌর্যবীর্যসম্পন্ন, মনের তুল্য বেগবান, কোন দারুণ প্রাণী উৎপন্ন হউক।

 দেরাজ ইন্দ্র এই ব্যাপার অবগত হইয়া বিষঃ চিত্তে কশ্যপের শরণাগত হইলেন। প্রজাপতি কশ্যপ দেবরাজমুখে সমস্ত শ্রবণ করিয়া বালখিল্যগণসীপে গমন পূর্বক কর্ম্মসিদ্ধির প্রার্থনা করিলেন। সত্যবাদী বালখিল্যগণ তৎক্ষণাৎ, তথাস্তু, বলিলেন। তখন প্রজাপতি কশ্যপ প্রিয় সম্ভাষণ পূর্বক সাদর বচনে তাহাদিগকে কহিলেন, দেখ, ইনি ব্রহ্মার নিয়োগানুসারে ত্রিভুবনের ইন্দ্র হইয়াছেন; তোমরাও আবার ইন্দ্রের নিমিত্ত যত্ন করিতেছ; ব্রহ্মার নিয়ম অন্যথা করা তোমাদিগের উচিত নয়; কিন্তু তোমাদিগের সংকল্পও ব্যর্থ করা আমার অভিপ্রেত নহে; অতএব তোমরা যে ইন্দ্রের নিমিত্ত যত্ন করিতেছ, তিনি অতি বলবান পক্ষীন্দ্র হউন, আমার অনুরোধে তোমরা দেবরাজের প্রতি প্রসন্ন হও। তপোধন বালখিল্যগণ মুনিশ্রেষ্ঠ প্রজাপতি কশ্যপের বাক্যশ্রবণানন্তর তাঁহার সমুচিত অর্জন করিয়া নিবেদন করিলেন, ভগবন্! আমরা সকলে মিলিয়া ইন্দ্রার্থে এই উদ্যোগ করিয়াছি, অপিনিও পুত্রার্থে এই অনুষ্ঠান করিয়াছেন; অতএব আপনি এই ফলোম্মুখ কর্ম্ম গ্রহণ করিয়া আহা শ্রেয়স্কর বোধ হয়, করুন।