পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আস্তীকপর্ব্ব।
১৪৭

 এই সময়েই যশস্বিনী কল্যাণিনী ব্রতপরায়ণ। দক্ষকন্যা বিনতা দেবী বহুকাল তপস্যা করিয়া ঋতুস্নানান্তে পুত্রকামনায় স্বামিসন্নিধানে উপস্থিত হইলেন। তখন কশ্যপ তাহাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, দেবি? তুমি যাহা মানস করিয়াছি, তাহা সফল হইবে, বালখিল্যগণের তপঃপ্রভাবে ও আমার সংকল্পবলে তোমার গর্ভে ত্রিভুবনেশ্বর দুই বীর পুত্র জন্মিবেক, তাহার মহাভাগ ও ত্রিলোকপূজিত হইবেক। ভগবান্ কশ্যপ বিনতাকে পুনর্বার কহিলেন, তুমি সাবধানা হইয়া এই, মহোদয় গর্ভ ধারণ কর। ঐ দুই সৰ্বলোকপূজিত কামরূপী বিহঙ্গম সকল পক্ষীর ইন্দ্রত্ব পদ প্রাপ্ত হইবেক। অনুস্থার প্রীতিপ্রফুল্ল বদনে ইন্দ্রকে কহিলেন, বৎস! তোমার সেই দুই মহাবীর্য ভ্রাতা তোমার সহায় হইবেক, তাহাদিগের দ্বারা, তোমার কখনও কোনও অপকার ঘটিবে না। অতএব বিষাদ পরিত্যাগ কর, তুমিই ত্রিভুবনে ইন্দ্র থাকিবে। কিন্তু আর কখন তুমি অতি কোপন বাশ্বজু ব্রহ্মবাদী ব্রাহ্মণদিগকে উপহাস বা অমান্য করিও না। ইন্দ্র এইরূপ পিতৃৰাক্য শ্রবণে নিঃশঙ্ক হইয়া দেবলোকে গমন করিলেন। বিনতাও পতির বরপ্রদান দ্বারা চরিতার্থতা লাভ করিয়া সাতিশয় হর্ষ প্রাপ্ত হইলেন, এবং যথাকালে অরুণ ও গরুড় দুই পুত্র প্রসব করিলেন। তন্মধ্যে অরুণ বিকলাঙ্গ, তিনি সূর্যদেবের পুনরাবন্তী হইয়াছেন; আর হিরণ্যগর্ভ ব্রহ্মা গরুড়কে পক্ষিজাতির ইন্দ্রত্ব পদে অভিষিক্ত করিয়াছেন। হে ভৃগুনন্দন! এক্ষণে সেই বিনতাহৃদয়নন্দন পতগেন্দ্রের অতিমহৎ কর্ম্ম কীর্ত্তন করিতেছি, শ্রবণ করুন।