লোহিতবর্ণ হইল। তেজস্বী শৃঙ্গী ক্রোধে অন্ধ হইয়া আচমন পূর্ব্বক এই বলিয়া রাজাকে শাপ প্রদান করিলেন, যে রাজকুলাধম মৌনব্রতপরায়ণ বৃদ্ধ পিতার স্কন্ধে মৃত সর্প ক্ষেপণ করিয়াছে, অতি তীক্ষতেজাঃ তীক্ষৰিষ সর্পরাজ তক্ষক আমার বচনানুসারে অতি ক্রুদ্ধ হইয়া অদ্য হইতে সপ্ত রাত্রির মধ্যে সেই কুরুকুলের অকীর্ত্তিকর, ব্রাহ্মণের অবমাননাকারী, পাপিষ্ঠ দুরাচারকে যমালয়ে লইয়া যাইবেক।
শৃঙ্গী ক্রোধভরে রাজা পরীক্ষিৎকে এই শাপ প্রদান করিয়া গোষ্ঠস্থিপিতৃসন্নিধানে উপস্থিত হইলেন। তথায় পিতার স্কন্ধে মৃত ‘ভুজগ অবলোকন করিয়া পূর্বাপেক্ষা অধিকতর কোপাবিষ্ট হইলেন, এবং দুঃখে অশ্রুবর্ষণ করিতে করিতে পিতাকে কহিলেন, পিতঃ! কুরুকুলাধম পরীক্ষিৎ তোমার যেরূপ অবমাননা করিয়াছিল, আমি ক্রোধে অধীর হইয়া তাহাকে তদুপযুক্ত এই ভয়ানক শাপ দিয়াছি যে, সর্পশ্রেষ্ঠ তক্ষক সপ্ত দিবসে তাহাকে যমালয়ে লইয়া যাইবেক।
শমীক ঋষি ক্রোধা পুত্রের এইরূপ উগ্র বাক্য শ্রবণ করিয়া কহিলেন, বৎস! তুমি যে কর্ম্ম করিয়াছ, তাহাতে আমি সন্তুষ্ট হইলাম না। ইহা তপস্বীর ধর্ম্ম নহে। আমরা সেই রাজার অধিকারে বাস করি, তিনি স্যায়পথাবলম্বী হইয়া আমাদের রক্ষা করিতেছেন; তাহার অনিষ্টাচরণ করা আমার অভিমত নহে। সৎপথাবলম্বী রাজ। কদাচিৎ কোনও অপর করিলেও অম্মাদৃশ লোকের ক্ষমা করা উচিত। ধর্ম্মকে নষ্ট করিলে ধর্ম্ম আমাদিগকে নষ্ট করেন, সন্দেহ নাই। দেখ, যদি রাজা রক্ষণাবেক্ষণ না কারন, আমাদের ক্লেশের আর পরিসীমা থাকে না, আর ইচ্ছানুরূপ ধর্ম্মানুষ্ঠান করিতে পারি