পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৮
মহাভারত।

 রাজা পরীক্ষিৎ গৌৱমুখের এই ভয়ঙ্কর বাক্য শ্রবণ ও স্বকৃত গর্হিত কর্ম্ম স্মরণ করিয়া সাতিশয় বিষ হইলেন। শমীকমুনি মৌনব্রত, এই নিমিত্তই উত্তর দেন নাই, ইহা শুনিয়া তাঁহার হৃদয় শোকানলে দগ্ধ হইতে লাগিল। যে মহাত্মা সেই প্রকার অবমানিত হইয়াও এরূপ দয়া প্রদর্শন করিলেন, তাহার উপরেও আমি তাদৃশ অত্যাচার করিয়াছি, মনোমধ্যে এই আলোচনা করিয়া তাহার পরিতাপের আর সীমা রহিল। বিনা দোষে ঋষির অবমাননা করিয়াছি, ইহা ভাবিয়া তিনি যেরূপ দুঃখিত হইলেন, নিজ মৃত্যুর কথা শুনিয়া তপ হইলেন না। অনন্তর গৌরমুখকে এই বলিয়া বিদায় করিলেন, আপনি মহর্ষিকে বলুন, যেন তিনি আমার প্রতি প্রসন্ন হন।

 গৌরমুখ প্রস্থান করিবামাত্র, রাজা একান্ত উদ্বিগ্নচিত্ত হইয়া, মন্ত্রিগণ সমভিব্যাহারে মন্ত্রণা করিয়া, এক সর্ব্বতঃসুরক্ষিত প্রাসাদ নির্মাণ করাইলেন, তথায় বহু চিকিৎসক, নানা ঔষধ ও মন্ত্রসিদ্ধ ব্রাহ্মণগণকে নিষোজিত করিলেন, এবং সেই প্রাসাদে থাকিয়া সর্ব প্রকারে রক্ষিত হইয়া রাজকার্য পর্যালোচনা করিতে লাগিলেন। কোনও ব্যক্তিই তাঁহার নিকটে যাইতে পায় না, সর্বত্রগামী বায়ুও সেই প্রাসাদে প্রবেশ করিতে পারে না।

 ব্রাহ্মণশ্রেষ্ঠ বিদ্বান্ মহর্ষি কাশ্যপ শুনিয়াছিলেন যে, পন্নগপ্রধান তক্ষক দংশন করিয়া রাজাকে যমালয়ে প্রেরণ করিবেক। অতএব তিনি মনে করিয়াছিলেন, তক্ষক দংশন করিলে আমি চিকিৎসা দ্বারা বাজাকে বিষমুক্ত করিব, তাহাতে আমার ধর্ম্ম ও অর্থ উভয় লাভ হইবেক। নির্ধারিত সপ্তম দিবস উপস্থিত হইলে, কাশ্যপ একাগ্র মনে গমন করিতেছেন, এমন সময়ে