পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৬
মহাভারত।

উপক্রম হওয়াতেই অপবিত্র নরকে পতিত হইতেছি। আমরা এই মহাগর্ত্তে লম্বমান হইয়া হতজ্ঞান হইয়াছি; এজন্য তোমার। পৌরুষ সর্বত্র বিখ্যাত, তথাপি তোমাকে চিনতে পারিতেছি না। হে মহাভাগ! তুমি আমাদিগকে শোকাবিষ্ট ও সাতিশয় দুঃখিত দেখিয়া অনুকম্পা প্রকাশ করিতেছ; অতএব তুমি আমাদিগের পরিচয় বধ কর। আমরা যাযাবর নামে ঋষি, বংশনাশের উপক্রম হওয়াতেই পুণ্যলোক হইতে প্রচুত হইয়া অধোগতি প্রাপ্ত হইতেছি, আমাদিগের প্রগাঢ় তপস্যার ফল বিলুপ্ত হইয়াছে, আমাদের আর কোনও উপায় নাই। আমরা অতি হতভাগ্য, আমাদিগের একমাত্র সন্তান আছে, কিন্তু সেই হতভাগ্যের থাকা না থাকা তুল্য হইয়াছে। তাহার নাম জরৎকারু। জরৎকারু বেদবেদাঙ্গপারগ, নিয়তাত্মা ও ব্রতপরায়ণ, সে সর্ব্ব ধর্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া একমাত্র তপস্যাধর্ম্ম অবলম্বন করিয়াছে, তাহার তপস্যালোভদোষেই আমাদের দুর্দ্দশা ঘটিয়াছে। তাহার ভার্য্যা নাই, পুত্র নাই, বান্ধবও নাই, তাহাতেই আমরা অনাথের ন্যায়, হতজ্ঞান হইয়া এই মহাগর্তে লমান আছি। হে দ্বিজবর! আমরা যে উশীরস্ত অবলম্বন করিয়া আছি, উহা আমাদিগের কুলস্তম্ব; আর যে স্তমুল দেখিতেছ, তাহা আমাদিগের কাল গ্রস্ত সন্তানপরম্পরা, এবং যে অৰ্দ্ধাৰশিষ্ট মুল দেখিতেছ ও যাহাতে আমরা লম্বিত আছি, ওই তপস্যারত মুঢ়মতি অচেতন জরৎকারু; আর যে মূষিক দেখিতেছ, ইনি মহাবল পরাক্রান্ত কাল, ইনিই অল্পে অল্পে তাঁহাকে সংহার করিতেছেন। জরৎকারুর কঠোর তপস্যায় আমাদিগের উদ্ধার সাধন হইবে না। আমরা হতভাগ্য, আমাদিগের মূল প্রায় শেষ হইয়াছে; এই দেখ, আমরা